ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ এডিস মশকের বিস্তার রোধ করে ঢাকাবাসীকে নিস্তার দিতে পারবো। আজ খিলগাঁও রেলগেট সংলগ্ন দক্ষিণ সিটির ১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তবর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘আমরা এডিস মশকের উৎসস্থল ও বিস্তার দেখে দেখে অবাক হচ্ছি। সেদিন ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আপনারা দেখেছেন- একটি হাউজে কি পরিমাণ লার্ভা পেয়েছি। সুতরাং আমরা আশা করছি, ঢাকাবাসী আরও সচেতন হবেন, আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন, আমাদেরকে তথ্য দেবেন। আমরা চিরুনি অভিযান চলমান রাখবো। চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ এডিস মশকের বিস্তার থেকে ঢাকাবাসীকে নিস্তার দিতে পারবো।’ খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগী সম্পর্কে যে তথ্য পাচ্ছি তাতে দেখা যাচ্ছে- কেউ হয়তোবা হাসপাতালের ঠিকানা দিয়েছেন, নতুবা বলে দিচ্ছেন একটি জায়গা যেখানে সুনির্দিষ্ট ঠিকানাও পাচ্ছি না। আবার অনেক সময় যখন আমরা যোগাযোগ করছি (যাদের সুনির্দিষ্ট ঠিকানা পাওয়া যাচ্ছে) তখন দেখা যাচ্ছে তারা কেউ হয়তো চট্টগ্রাম থেকে এসেছেন, কেউ ময়মনসিংহ থেকে এসেছেন, কেউ অন্য জায়গা থেকে খালার বাসায় বেড়াতে এসেছেন, কেউ দুলাভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছেন। দেখা যায় তারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েই এখানে এসেছেন। সুতরাং ঢালাওভাবে বলা যাবে না, আশি ভাগ ডেঙ্গু রোগী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার। বিপুল পরিমাণ রোগী পাচ্ছি যারা বাইরের জেলা থেকে এসেছেন। নোয়াখালীর রোগী পাচ্ছি, যশোরের রোগী পাচ্ছি, গাজীপুরের রোগী পাচ্ছি। এরকম অনেক জায়গার রোগী পাচ্ছি। আমরা কিন্তু যাদের তথ্য পাচ্ছি, সব জায়গায় যাচ্ছি। তার মানে এই নয় যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিস্তার নেই? প্রচুর বিস্তার আছে। আমরা এডিসে উৎসস্থল দেখে দেখে অবাক হচ্ছি।’
এডিস লার্ভার বিস্তার রোধে চলমান চিরুনি অভিযানে শুধু ঊর্ধ্বমুখিতায় রোধ করিনি বরং কিছুটা হলেও তা নিম্নমুখী নিয়ে আসতে পেরেছি উল্লেখ করে মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি -এডিস লার্ভার উৎসস্থল সম্পর্কে ঢাকাবাসীর উদাসীনতাও রয়েছে। যার কারণে অনেক পানির ছোট ছোট আধার সৃষ্টি হয়। শ্রাবণ মাসের আজ ২৬ তারিখ, এই ২৬ দিনের প্রত্যেকদিনই থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং একদিকে পরিষ্কার করছি, উৎস নিধন করছি, আবার অন্যদিকে নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরী হচ্ছে। প্রায় ৮ হাজার বসতবাড়িতে অভিযান চালিয়েছি, তারপরও সেরকমভাবে সচেতনতা আমরা পাচ্ছি না। বিশেষ করে ছাদবাগানগুলোতে বিপুল পরিমাণে লার্ভার উৎস লক্ষ্য করছি।’
মেয়র নগরবাসীকে যেসব জায়গায় পানি জমতে পারে সেসব আধার বিনষ্ট করতে এবং এডিস মশার উৎসস্থল সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনার আশপাশে যদি কোন লার্ভার উৎস থাকে তাহলে আমাদেরকে জানান। আমরা সরাসরি সেখানে যাবো। আমাদের প্রায় ১ হাজার জনবল সকাল থেকে সন্ধ্যা সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে, উৎস নিধনে কাজ করছে, অভিযান পরিচালনা করছে। সুতারাং আমরা যত বেশী তথ্য পাবো তত বেশী সফল হবো।’
এর আগে তিনি দক্ষিণ কুতুবখালীতে খাল পরিষ্কারকরণ কার্যক্রম, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী খালপাড় এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম এবং পরে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের এনায়েতগঞ্জ ম্যাটাডোর ডায়াগনস্টিক সেন্টার সংলগ্ন বাইলেন এলাকায় সড়ক সংস্কার কার্যক্রম ও ১৬ নম্বর ওয়ােের্ডর পুকুর পাড় মসজিদ থেকে মেহেরুন্নেসা স্কুল পর্যন্ত সড়ক সংস্কার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ সময় ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডসমূহের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। তথ্য-বাসস
আজকের বাজার/আখনূর রহমান