এবারো হতাশ করলো কুমিল্লা

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলাফলে গত বছরের ন্যায় এবারো হতাশ করলো কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। জেএসসি-জেডিসিতে এবার গড় পাসের হার ৮৩ . ৬৫ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৯৩ . ৬ শতাংশ। অর্থাৎ এবার ৯ . ৪১ শতাংশ পাসের হার কমেছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৬২ . ৮৩ শতাংশ, যা ঘোষিত ফলাফলের সর্বনিম্ন। গত বছরও এই বোর্ডের ফলাফল ছিল ৮৯.৬৮ শতাংশ। যা ছিল ঐ বছরের সর্বনিম্ন ফলাফল।

এছাড়া এবছর বোর্ডওয়ারি পাসের হার ফলাফলে দেখা যায়, ঢাকা বোর্ড ৮১.৬৬ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯১.৩৬, রাজশাহী বোর্ড ৯৫.৫৪ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯৭.৬৮ শতাংশ, যশোর বোর্ড ৮৩.৪২ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯৫.৩৫ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ড ৮১.১৭ শতাংশ, গত বছর ছিল ৯০.৭৫ শতাংশ, বরিশাল বোর্ড ৯৬.৩২ শতাংশ, গত বছর ছিল ৯৭.৩৮ শতাংশ, সিলেট বোর্ড ৮৯.৪১ শতাংশ, গত বছর ছিল ৯৩.৩৭ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ড ৮৮.৩৮ শতাংশ, গত বছর ছিল ৯২.৯৯ শতাংশ। আর মাদরাসা বোর্ডে ৮৬.৮০ শতাংশ, গত বছর ছিল ৯৪.০২ শতাংশ।

কুমিল্লা বোর্ডের খারাপ ফলাফল নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, কুমিল্লা বোর্ড ধারাবাহিকভাবে খারাপ করছে। এর প্রভাব সার্বিক ফলাফলে পড়ছে। তবে কেন কুমিল্লা খারাপ করছে সে বিষয়ে আমাদেরকে গভীরে যেতে হবে। এটা নিয়ে গবেষণা করতে চাই। তবে আজকে যেহেতু ফল প্রকাশ হলো আজই তো আর এটা নিয়ে মাঠে নামা সম্ভব না। আমরা এটা নিয়ে মাঠে যাবো। পর্যালোচনা করবো। সার্বিক ফলাফল নিয়ে আমরা গবেষণা করবো।

শনিবার ৩০ ডিসেম্বর সচিবালয়ে ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সরবরাহকৃত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

ফলাফল বিশ্লেষনে দেখা যায়, এবছর ৮টি সাধারণ বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ড মিলিয়ে ২৪ লাখ ৮২ হাজার ২৪২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে মোট পাস করেছে ২০ লাখ ১৮ হাজার ২৭১ জন, যা গত বছর ছিল ২১ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ জন; অর্থাৎ কমেছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭০৪ জন। আর পাসের হারে ৮৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯৩ দশমিক ০৬ শতাংশ অর্থাৎ কমেছে ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।

এ বছর মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৬২৮ জন; গত বছর ছিল ২ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৮ জন; কমেছে ৫৫ হাজার ৯৬০ জন। মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ২ হাজার ৮৩৪ টি, গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৩৪ টি, বেড়েছে ১০০ টি।

এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ১১ লাখ ২১ হাজার ২২ জন, যা গত বছর ছিল ১০ লাখ ৯৬ হাজার ৫২২ জন, বেড়েছে ২৪ হাজার ৫০০ জন। আর ছাত্রী ১২ লাখ ৯১ হাজার ৬৮৯ জন, যা গত বছর ছিল ১২ লাখ ৫০ হাজার ৪৩৭ জন, বেড়েছে ৪১ হাজার ২৫২ জন। এ বছর ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৭ জন বেশী অংশগ্রহণ করেছে।

এ বছর ছাত্র পাস করেছে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৩ জন, যা গত বছর ছিল ১০ লাখ ১৮ হাজার ৯১৯ জন, কমেছে ৮২ হাজার ১৮৬ জন। আর এ বছর ছাত্রী পাস করেছে ১০ লাখ ৮১ হাজার ৫৩৮ জন, যা গত বছর ছিল ১১ লাখ ৬৫ হাজার ০৫৬ জন, কমেছে ৮৩ হাজার ৫১৮ জন। এ বছর ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮০৫ জন বেশী পাস করেছে।

এ বছর ছাত্র পাসের হার ৮৩ দশমিক ৫৬, যা গত বছর ছিল ৯২ দশমিক ৯২ কমেছে ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর ছাত্রী পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৩, যা গত বছর ছিল ৯৩ দশমিক ১৭, কমেছে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮০ হাজার ৮৯৮ জন ছাত্র, যা গত বছর ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৩৪৫ জন, কমেছে ২৫ হাজার ৪৪৭ জন।

এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৭৩০ জন ছাত্রী, যা গত বছর ছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ২৪৩ জন, কমেছে ৩০ হাজার ৫১৩ জন। এ বছর জিপিএ ৫ ছাত্রের তুলনায় ২৯ হাজার ৮৩২ জন ছাত্রী বেশী পেয়েছে।

অন্যদিকে, বিদেশের ৯টি কেন্দ্র থেকে এবার অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ছিল ৫৯৯ জন, যা গত বছর ছিল ৬২৬; কমেছে ২৭ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৫৬২ জন, গত বছর ছিল ৬২৩ জন; কমেছে ৬১ জন। এ বছর পাসের শতকরা হার ৯৩ দশমিক ৮২, যা গত বছর ছিল ৯৯ দশমিক ৫২, কমেছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। জিপিএ ৫ এর সংখ্যা ৮৩ জন, গত বছর ছিল ৮৪ জন, কমেছে ১ জন।

আজকের বাজার : এলকে/ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭