এবার ৫৯ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল রাশিয়া

Russian President Vladimir Putin attends a briefing for reporters at the end of the APEC summit in Danang, Vietnam November 11, 2017. Sputnik/Mikhail Klimentyev/Kremlin via REUTERS ATTENTION EDITORS - THIS IMAGE WAS PROVIDED BY A THIRD PARTY.

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আরো ২৩ দেশের ৫৯ জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে রাশিয়া। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে দেশটি। ব্রিটেনে রাশিয়ার সাবেক এক গুপ্তচর ও তার মেয়ের ওপর নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগের অভিযোগ এনে সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে রাশিয়ান কূটনীতিক বহিষ্কারের জবাবে শুক্রবার এ উদ্যোগ নেয় রাশিয়া।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, রাশিয়া ওই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর উদ্যোগের জবাবে মস্কো আরো চারটি দেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার রাখে বলে জানিয়েছে।

এর একদিন আগে রাশিয়া সেদেশে থাকা ৬০ মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কার করে এবং সেন্ট পিটার্সবার্গে থাকা মার্কিন কনস্যুলেট অফিস বন্ধের নির্দেশ দেয়। তার আগে সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশ থেকে ৬০ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের আদেশ দেন। এ ছাড়া সিয়াটলে অবস্থিত রাশিয়ান দূতাবাসও বন্ধ করে দেয়া হয়।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঠাণ্ডা যুদ্ধের (কোল্ড ওয়ার) পর এই প্রথম এতো বেশি কূটনীতিক বহিষ্কার ও পাল্টা বহিষ্কারের ঘটনা ঘটল।

উল্লেখ, গত ৪ মার্চ যুক্তরাজ্যের সলসবারির পার্ক থেকে সাবেক রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল এবং তার মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপালকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে জানা যায়, তাদের ওপর নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মস্কোকে দায়ী করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। যদিও রাশিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ মার্চ রাশিয়ার ২৩ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ব্রিটেন সরকার। জবাবে ১৭ মার্চ রুশ সরকার সমানসংখ্যক ব্রিটিশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের আদেশ দেয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ১৬টি রাষ্ট্র রুশ কূটনীতিক বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশ থেকে ৬০ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের আদেশ দেন। বহিষ্কারের পাশাপাশি সিয়াটলে অবস্থিত রাশিয়ান দূতাবাসও বন্ধ করে দেয়া হয়। একইভাবে ২০টির বেশি দেশ যুক্তরাজ্যকে অনুসরণ করে।

এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে মস্কো থেকে ৫৮ জন এবং ইয়েকাতেরিনবার্গ শহর থেকে ২ জন মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কার করে রাশিয়া। সেইসঙ্গে সেন্ট পিটার্সবার্গে থাকা মার্কিন কনস্যুলেট অফিস বন্ধের নির্দেশ দেয়। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই সময় বলেন, প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এটি করা হয়েছে বলে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া অন্যান্য যেসব দেশ রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে তাদের ব্যাপারে রাশিয়া একই প্রতিক্রিয়া দেখাবে বলে সতর্ক করেন তিনি। খবরে বলা হয়েছে, যেসব দেশ রাশিয়ার কূটনীতিক বহিষ্কার করেছে, সেসব দেশের সিনিয়র দূতদের শুক্রবার মস্কো বলেছে, তারাও সংশ্লিষ্ট দেশের সমান সংখ্যক কূটনীতিক বহিষ্কার করতে যাচ্ছে।

এদিকে, শুক্রবারও মস্কোয় ব্রিটিশ দূত লরি ব্রিস্টোকে তলব করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। রয়টার্স বলছে, এ ঘটনায় কতজন বিট্রিশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে তা বলতে রাজি হননি দেশটির (যুক্তরাজ্য) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র। তবে লন্ডন বলছে, মস্কো যা করছে তা দুঃখজনক এবং তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে।

অন্যদিকে, রাশিয়া ব্রিটেনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, পূর্ব ও পশ্চিমের সম্পর্ক নষ্ট এবং মস্কোকে একঘরে করার জন্য এ ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

এদিকে, ব্রিটেনের হাসপাতালে চিকিৎসারত ইউলিয়া স্ক্রিপাল অনেকটাই সুস্থ হয়েছেন এবং তার বাবার অবস্থা গুরুতর হলেও তা উদ্বেগজনক নয় বলে খবরে বলা হয়েছে। শুক্রবার বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইউলিয়ার জ্ঞান ফিরেছে এবং তিনি কথা বলছেন।

এস/