এসিআই ও পবিপ্রবি’র মধ্যে বায়োচার প্রযুক্তি নিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

এ্যাডভান্স কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (এসিআই) ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) উপাচার্য কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বাক্ষরিত হয়েছে। পবিপ্রবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত’র উপস্থিতিতে এসিআই ফার্টিলাইজারের বিজনেস ডিরেক্টর বশির আহমেদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম এই প্রযুক্তি বিনিময় স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রশিক্ষণ ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম চৌধুরী, পোস্ট গ্র্যাজুয়েশান বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বায়োচার প্রযুক্তির উদ্ভাবক ও গবেষক প্রফেসর ড. শামীম মিয়া এবং এসিআই ফার্টিলাইজারের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের কৃষিবিদ জাহিদুল ইসলাম খাঁন।

বায়োচার এক ধরনের চার বা কয়লা যা বাতাসের অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে তাপের সাহায্যে উদ্ভিদ জাতীয় পদার্থ যেমন কাঠ, কাঠের গুঁড়া, আগাছা থেকে তৈরি করা হয়। এটি মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে, রাসায়নিক সারের কার্যকারিতা বাড়ায়, মাটিতে গাছের খাদ্য উপাদানগুলোকে ধরে রাখে এবং মাটির অম্লত্ব দূর করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য মাটিতে বায়োচার প্রয়োগ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে এবং অনেক দেশে এটি প্রয়োগ করা হচ্ছে। পৃথিবীর অনেক দেশে বায়োচার তৈরির জন্য শহরের দৈনন্দিন যে আবর্জনা হয় তা ব্যবহার করা হয়।

এই সমঝোতা স্মারকের অধীনে, পবিপ্রবি বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য এসিআই ফার্টিলাইজারকে বায়োচার উৎপাদন প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে। এসিআই বায়োচার সমৃদ্ধ সার উৎপাদনের জন্য তাদের কারখানায় প্রবেশাধিকার প্রদান করবে এবং তাদের নিজস্ব গবেষণা ও উন্নয়ন ক্ষেত্রে এবং কৃষকদের মাঠে প্রদর্শনী স্থাপন করবে। এছাড়াও, বায়োচার সমৃদ্ধ সার প্রযুক্তি এসিআই’র নিকট হস্তান্তর করবে। এসিআই দেশের কৃষকদের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য বায়োচার সমৃদ্ধ সার প্রযুক্তি গ্রহণ করবে।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যদি বায়োচার তৈরিতে ঢাকাসহ অন্যান্য শহরের আবর্জনা ব্যবহার করা যায়, তবে একদিকে যেমন আবর্জনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে অন্যদিকে এটি সার হিসেবে জমিতে ব্যবহার করা যাবে।

উল্লেখ্য, ‘বায়োচার ইনরিচ অর্গানিক ফার্টিলাইজার’ বা ‘কার্বন সমৃদ্ধ জৈব সার’ মাটির খরা, অম্লত্ব ও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রন করে মটির স্থায়ী স্বাস্থ্যরক্ষা করে এবং মাটিতে অবস্থিত বিষাক্ত আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, সীসা ইত্যাতি ফসলে ঢুকতে বা আসতে দেয় না। এতে করে ফসলের উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়িয়ে কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এছাড়াও, এ সার মাটিতে বসবাসকারী অনুজীবের সংখ্যা শত শত গুন বাড়িয়ে দেয় এবং মাটির পানি ধারন ক্ষমতা ৫ গুন বৃদ্ধি করে।