প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গত ১৩ অক্টোবর রাতে ঢাকা ছেড়েছেন। তিনি এক মাসের ছুটিতে আছে। তার ফিরে এসে স্বপদে বসা সুদূর পরাহত।
১৪ অক্টোবর শনিবার সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যখনই প্রধান বিচারপতি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না, তখন জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি দায়িত্ব পালন করবেন। আবদুল ওয়াহহাব মিয়া তো সাংবিধানভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে ভারপ্রাপ্ত নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের সব দায়িত্ব পালন করবেন।’
এস কে সিনহার ফিরে এসে দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘ওনার আবার ফিরে এসে বসা সুদূর পরাহত।’
গতকাল শুক্রবার বিদেশে যাওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনরত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রবীণতম বিচারপতির উদ্ধৃতি দিয়ে মাননীয় আইনমন্ত্রী প্রকাশ করেছেন যে, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অচিরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনে পরিবর্তন আনবেন। প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কিংবা সরকারের হস্তক্ষেপ করার কোনো রেওয়াজ নেই। তিনি শুধু রুটিনমাফিক দৈনন্দিন কাজ করবেন।
এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এটা তো কোনো যুক্তির কথা হলো না।’
গতকাল প্রধান বিচারপতির ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমার (প্রধান বিচারপতি) দৃঢ় বিশ্বাস, সরকারের একটি মহল আমার রায়কে ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করে পরিবেশন করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতি অভিমান করেছেন, যা অচিরেই দূরীভূত হবে বলে আমার বিশ্বাস। সেই সাথে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে আমি একটু শঙ্কিত বটে।
এস কে সিনহা লিখেছেন, আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। কিন্তু ইদানিং একটি রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহল, আইনজীবী ও বিশেষভাবে সরকারের মাননীয় কয়েকজন মন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে সমালোচনা করেছেন, এতে আমি সত্যিই বিব্রত।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার কথা বলে গত ৩ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসের ছুটি নেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। পরে ১৩ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশে অবস্থান করতে চান, বিষয়টি উল্লেখ করে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১০ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির কাছে একটি চিঠি পাঠান প্রধান বিচারপতি।
এরপর ১২ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ২ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে বা তার কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১৫ অক্টোবর ২০১৭