আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশে আরও ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির কাজ শেষ হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরিটি (বেজা)। এর ফলে দেশে মোট অর্থনৈতিক অঞ্চল বেড়ে হবে ১৫টি।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, পরিকল্পিত ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে ২৩টির জমি অধিগ্রহণ, ডেভেলপার নিয়োগ ও কাঠামোগত উন্নয়সহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। সংবাদ সংস্থা বাসসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২৩ টির মধ্যে ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। এগুলো হলো- মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন, মিরসরাই ইকোনমিক জোন, নাফ ট্যুরিজম স্পেশাল ইকোনমিক জোন, সাবরাং ইকোনমিক জোন, মৌলভীবাজার ইকোনমিক জোন, জামালপুর ইকোনমিক জোন, সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও ইকোনমিক জোন, ইস্ট-ওয়েস্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোন এবং আকিজ ইকোনমিক জোন।
বিইজেডএ প্রধান বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে মংলা ইকোনমিক জোন, আব্দুল মোনেম ইকোনমিক জোন, বে ইকোনমিক জোন, আমান ইকোনমিক জোন এবং মেঘনা ইকোনমিক জোনের কাজ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী এই অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, চীন এবং জাপানসহ বেশ কিছু বিদেশী বিনিয়োগকারী এবং দেশের আভ্যন্তরীণ বিনিয়োগকারীরা এ খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
পবন চৌধুরী বলেন, এই অঞ্চলে ঝামেলামুক্ত বিনিয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার আইনি জটিলতা নিরসনের জন্য এরইমধ্যে প্রয়োজনীয় আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। একইসঙ্গে বিনিয়োগের যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে সরকার এই অঞ্চলে বিদ্যুতের ওপর ভ্যাট অপসারণ, আয়কর হ্রাস, অন্যান্য প্রণোদনাসহ স্থানীয় কেনাকাটা শুল্কমুক্ত ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের ডেভেলপার এবং বিনিয়োগকারী উভয়ই এই প্রণোদনা ভোগ করতে পারবে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে দেশের ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এখানে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল অ্যাক্ট ২০১০’ এর মাধ্যমে ২০১০ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে বেজা পরিচালিত হচ্ছে। দেশের সম্ভাবনাময় অঞ্চলগুলোতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
আঞ্চলিক যোগাযোগ, বন্দরগুলোর সাথে যাতায়াতের সুবিধা এবং পর্যাপ্ত শ্রমিক ও পণ্য পরিবহনসহ অপরাপর সুবিধার কথা মাথায় রেখে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান বাছাই করা হয়েছে। বিইজেডএ এই অঞ্চলগুলো পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর আওতায় এই প্রতিষ্ঠানটি এসব অঞ্চলে ডেভেলপার নিয়োগ দিচ্ছে। একই সাথে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণের মাধ্যমে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানও কাজ করছে।
পবন চৌধুরী সরকারের ‘ভিশন ২০২১’ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিনিয়োগ, উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল বড় ভূমিকা রাখবে।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ১৯ জুন ২০১৭