ওয়েস্ট ব্রুমের সাথে ড্র করে পয়েন্ট হারালো লিভারপুল, উল্ফসের সাথে ড্র করেছে টটেনহ্যাম

ঘরের মাঠে ধুকতে থাকা ওয়েস্ট ব্রুমের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে বড়দিনের বিলম্বিত উপহার পেয়েছেন প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। আরেক ম্যাচে উল্ফসের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছে টটেনহ্যাম।
এই ড্রয়ে এভারটনের থেকে তিন পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছে লিভারপুল। লিগে ৩৪ ম্যাচ পর প্রথমবারের মত ঘরের মাঠ এ্যানফিল্ডে পয়েন্ট হারালো অল রেডসরা। প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা সময়ই লিভারপুলের আধিপত্য থাকলেও জয় নিশ্চিত হয়নি। ১২ মিনিটে দুর্দান্ত দক্ষতায় লিভারপুলকে এগিয়ে দেন সাদিও মানে। বিরতির আগ পর্যন্ত ওয়েস্ট ব্রুমকে তাদের অর্ধেই আটকে রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধে ধীরে ধীরে সফরকারীরা নিজেদের ছন্দে ফিরিয়ে আনে।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত ওয়েস্ট ব্রুমের কোচ হিসেবে ডাগআউটে ছিলেন স্যাম অলড্রিচ। এ্যানফিল্ডে ইংল্যান্ডের সাবেক এই ম্যানেজারের অতীত রেকর্ডও বেশ সমৃদ্ধ। তারই ধারাবাহিকতায় ম্যাচ শেষের আট মিনিট আগে কর্ণার থেকে হেডের সাহায্যে ওয়েস্ট ব্রুমের এক পয়েন্ট নিশ্চিত করেন সেমি আজায়ি। এই ড্রয়ে রেলিগেশন এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক পয়েন্ট সংগ্রহ করে নিল ওয়েস্ট ব্রুম।
ক্লপের লিভারপুলের বিপক্ষে এ নিয়ে চারটি ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের হয়ে লিগের চারটি এ্যাওয়ে ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেলেন অলড্রিচ।
ম্যাচ শেষে ক্লপ বলেছেন, ‘এটা আমাদের নিজস্ব ভুল ছিল। আমরা তাদেরকে খুব সহজ কর্ণার উপহার দিয়েছিলাম যার সুযোগ তারা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে। এই একটি বিষয়ই তারা আমাদের কাছ থেকে আজ পেয়েছে, আর সেই সুযোগে এক পয়েন্ট আদায় করে নিয়েছে।’
এই ড্রয়ে ওয়েস্ট ব্রুম এখনো তলানির থেকে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও রেলিগেশন থেকে রক্ষার জন্য আর মাত্র পাঁচ পয়েন্ট পেলেই চলবে।
অলড্রিচ বলেছেন, ‘কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই আজ করে দেখিয়েছে খেলোয়াড়রা। আমি তাদের মধ্যে যথেষ্ঠ অঙ্গীকার , অদম্য আকাঙ্খা ও বেশ কিছু বাড়তি গুনাবলী দেখতে পেয়েছি।’
টানা চার ম্যাচে অপরাজিত থাকার কারনে লিভারপুলের চেয়ে নিজেদের পয়েন্টের ব্যবধান কমাতে পারছে না টটেনহ্যাম। কাল ১-১ গোলের ড্রয়ের পর অবশ্য টেবিলের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে স্পার্সরা। উল্ফসের মাঠের শুরুটাও দারুন হয়েছিল জোসে মরিনহোর শিষ্যদের। ম্যাচের শুরুতে টানগাই এনডোম্বেলের শট রক্ষা করতে পারেননি স্বাগতিক গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিও। দুই সপ্তাহ আগে ক্রিস্টাল প্যালেসের সাথে ১-১ গোলের ড্রয়েল ম্যাচটির মতই মরিনহোর দল শেষ পর্যন্ত এই লিড ধরে রাখতে পারেনি।
ম্যাচ শেষে মরিনহো বলেছেন, ‘পুরো ম্যাচে আমাদের সেই ধরনের গোলের আকাঙ্খা লক্ষ্য করা যায়নি। যে কারনে ব্যবধানও বাড়েনি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে উল্ফসের বিপক্ষে এক পয়েন্ট অর্জন করাটা খারাপ কিছু নয়। কিন্তু প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগের পর পুরো ৮৯ মিনিটই আমাদের সামনে সুযোগ ছিল গোল করার। পুরো বিষয়টি সত্যিই হতাশার।’
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য উল্ফসই আধিপত্য দেখিয়েছে। ইনজুরি আক্রান্ত রাওল জিমেনেজের অনুপস্থিতিতে অবশ্য কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি। যদিও ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে অবশেষে নুনো এস্পিরিতো সান্তোর দল স্বস্তির গোল উপহার পায়। পেড্রো নেটোর কর্ণার থেকে রোমেইন সেইস গোল কওে দলকে মূল্যবান এক পয়েন্ট উপহার দেন।
স্টপেজ টাইমে ম্যাচ জয়ের বড় সুযোগ হাতছাড়া করে উল্ফস। ফ্যাবিও সিলভার হেড সরাসরি জমা পড়ে স্পার্স গোলরক্ষক হুগো লোরিসের হাতে।
এর আগে দিনের শুরুতে ৫ মিনিটেই প্যাট্রিক রাশফোর্ডের পেনাল্টিতে বার্নালিকে ১-০ গোলে পরাজিত করে রেলিগেশন জোন থেকে ৯ পয়েন্ট দুরে রয়েছে লিডস। একইসাথে মার্সেলো বিয়েসলার দল টেবিলের ১২তম স্থানে উঠে এসেছে। এই পরাজয়ে ক্লারেটসরা টেবিলের ১৭তম স্থানে নেমে গেছে, যদিও রেলিগেশন জোন থেকে এখনো দুই পয়েন্ট দুরে রয়েছে।
ওয়েস্ট হ্যামের সাথে ২-২ গোলে ড্র করে বার্নলিতে গোল ব্যবধানে পিছনে ফেলেছে ব্রাইটন। যদিও ১৪ ম্যাচে মাত্র দ্বিতীয় জয়ের জন্য অপেক্ষা আরো বিলম্বিত হলো।