কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন আজ

বাংলা সাহিত্যের নন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন আহমেদ৷ তার ডাক নাম ছিল কাজল৷ বাবার রাখা প্রথম নাম শামসুর রহমান হলেও পরে তার বাবা ছেলের নাম বদলে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ৷

গল্প, উপন্যাস, নাটক, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শিল্প-সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন। ২০১২ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে গেলেও হুমায়ুন আহমেদ রেখে গেছেন তার অমূল্য সৃষ্টি সম্ভার।

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বাঙালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী জনপ্রিয় লেখক হিসেবে গণ্য করা হয় তাকে। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার ও গীতিকার। আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের পথিকৃৎ তিনি।

বাংলা সাহিত্যে সংলাপ প্রধান নতুন শৈলীর জনক হুমায়ূন আহমেদ। তার সৃষ্ঠ চরিত্র ‘হিমু’, ‘মিসির আলী’, ‘শুভ্র’ তরুণ-তরুণীদের কাছে হয়ে ওঠে জনপ্রিয় ও অনুসরণীয়। তিনি তিনশ’র বেশি বই লিখেছেন।

তরুণসমাজে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই সাহিত্যিক আশির দশক থেকে মধ্যবিত্ত জীবনের কথা সহজ-সরল গদ্যে তুলে ধরে পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন।

শুধু কথাসাহিত্যিক হিসেবে নন, হুমায়ূন আহমেদ টেলিভিশন নাটক নির্মাণেও ভিন্ন ধারা চালু করেন। আশি-নব্বইয়ের দশকে ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘বহুব্রীহি’, ‘আজ রোববার’ নাটক ইতিহাস সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে তিনি অসংখ্য একক ও ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে শিল্প-সাহিত্যে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন তিনি। সাড়া ফেলে দেন ‘শঙ্খনীল কারাগার’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করে। এরপর ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’সহ ১২টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করে সফলতা পান। বেশ কয়েকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেন।

অসাধারণ সব সৃষ্টিকর্মের গুণে কয়েক দশক ধরে হুমায়ূন আহমেদ পাঠক-দর্শকদের মোহজালে আবদ্ধ রাখেন। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা অবস্থায় কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউয়র্কে মারা যান জনপ্রিয় এই কথাসাহিত্যিক।

তার সৃজনশীল সৃষ্টিকর্মের গুণে হুমায়ূন আহমেদ বাঙালি পাঠক-দর্শকদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

আজকের বাজার/এমএইচ