কাজী লুৎফুল কবীর: রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রায় এক লাখ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
বেসরকারিভাবে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা লাঙ্গল প্রতীকে ১,৬০,৪৮৯ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরফুদ্দীন আহম্মেদ ঝন্টু ৬২,৪০০ ভোট পেয়েছেন।
বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা ৩৫, ১৩৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
লাঙ্গলের বিজয়ে নগরীজুড়ে লাঙ্গলভক্তদের মধ্যে বইছে আনন্দের ঢেউ। চলছে মিষ্টিমুখ। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে চলছে বিজয় উল্লাস।
লাঙ্গলভক্তদের মধ্যে আনন্দের ঢেউ বইছে উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু বলেন- রংপুর হলো জাতীয় পার্টির লাঙলের দুর্গ ও মানুষের আস্থার জায়গা। রংপুরের মানুষের আশ্রয়স্থল হলো জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টির অনেক নেতাকর্মী অতীতে অনেক চাপে থেকেও লাঙলকে ধরে রেখেছেন। জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে রংপুরকে সবাই চেনে ও জানে। এখানে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিকল্প কেউ নেই। আর এরশাদের মার্কা লাঙল। সেই লাঙলকে হটানোর মতো ক্ষমতা কারো নেই। জনগণ জাতীয় পার্টিকে নিজের দল মনে করে। তারা জানে রংপুরের মানুষ এরশাদকে ভালবাসে বলেই বারবার লাঙলকে এখানে নির্বাচিত করে।
অভিনন্দন জাপার
বরাবরের মতো এবারো হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ও লাঙ্গলের প্রতি অবিচল আস্থা রাখায় রংপুরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি। এছাড়া সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ায় সরকার, নির্বাচন কমিশন, রংপুরের স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, গণমাধ্যম কর্মীদেরও অভিনন্দন জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৃথক বিবৃতিতে এই অভিনন্দন জানান তারা।
এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, এরশাদ, জাতীয় পার্টি আর রংপুরের জনতা একে অপরের পরিপূরক। রংপুরবাসী জাতীয় পার্টির আত্মার পরম আত্মীয়। বরাবরের মতো এবারো তারা লাঙল মার্কাকে তাদের আস্থার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করায় জাতীয় পার্টির সারাদেশের নেতাকর্মীদেরও অভিনন্দন জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমাদের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাকে জানাচ্ছি অভিনন্দন। এছাড়া নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং সাংবাদিকদেরকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আলাদা বিবৃতিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, রংপুরবাসী হলো জাতীয় পার্টির প্রাণশক্তি। তারা সেটা বারবার প্রমাণ করেছে। এবারো তারা লাঙলের উপর ভরসা রাখায় আমি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সকল নেতাকর্মী ও ঢাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমার প্রিয় রংপুরবাসীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এই নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও নির্বাচন কমিশনকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
রংপুরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ মোস্তফা
বিজয়ী হওয়ায় আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ জাতীয় পার্টি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং রংপুরের সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ নগরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আমার কাছে আজ থেকে নগরীর সব মতের সব পথের মানুষ হবে নিরাপদ আশ্রয়স্থল। যেকোনো ন্যায়সঙ্গত বিষয়ে আমি তাদের পাশে থাকব। আমার দরজায় কখনো উঁচু-নিচুর পর্দা থাকবে না।
তিনি বলেন, এখন আমার প্রথম কাজ হবে নগরীর রাস্তাঘাট ঠিক করা। বর্তমানে এসব রাস্তাঘাট দিয়ে চলাচল করা যায় না। মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। নগরবাসীকে দূর্বিষহ এ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে প্রথমেই রাস্তাঘাট সংস্কার, মেরামত ও নির্মাণ করতে চাই।
মোস্তফা আরো বলেন, আমার দ্বিতীয় কাজ হবে শ্যামাসুন্দরী খাল দখলমুক্ত করে তাতে পানির ধারা প্রবাহিত করা। শ্যামাসুন্দরীকে আমি ঘাঘট টু ঘাঘটে নিয়ে যেতে চাই। ময়লা আবর্জনা শ্যামাসুন্দরীর স্রোত দিয়ে বয়ে দিয়ে আমি পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দিতে চাই।
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জহির ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন- রংপুরবাসী জানে জাতীয় পার্টি থাকলে জনগণের কথা শুনবে এবং তাদের নির্ভরতার জায়গাটা থাকবে। তাই রসিকের নির্বাচনে জাপার প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে ব্যালটের মাধ্যমে লাঙল প্রতীককে প্রত্যক্ষভোটে নির্বাচিত করে রংপুরবাসী প্রমাণ করে দেখালেন লাঙলের বিকল্প নেই।
আজকের বাজার: এলকে/ ২১ ডিসেম্বর ২০১৭