করপোরেট কর ২ শতাংশ কমানোসহ ১০ প্রস্তাব আইসিএবি’র

আসছে বাজেটে (২০১৯-২০ অর্থবছর) দেশের সব সেক্টরের কোম্পানির করপোরেট কর ২ শতাংশ কমানোসহ ১০ দফা প্রস্তাব জানিয়েছে দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট বাংলাদেশ (আইসিএবি)।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনে ‘আগামী জাতীয় বাজেটের ওপর চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের ভাবনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনের আইসিএবি সভাপতি নেসার উদ্দিন এফসিএ।
নেসার উদ্দিন বলেন, বর্তমানে মাত্র এক শতাংশ মানুষ কর দেয়। ভবিষ্যতে বৃদ্ধি করা না গেলে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব না। সেজন্য ব্যবসায়ীদের সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে এখনো ট্যাক্স দেওয়ার ভীতি কাজ করে। সেই ভয় দূরীকরণে এনবিআরকে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে।
আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, ট্যাক্সরেট কমালেই রাজস্ব কমে যাবে এই রকম আশঙ্কা করা ঠিক হবে না। কারণ করপোরেট ট্যাক্স কমানো হলে আরও অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী করের আওতায় প্রবেশ করতে পারবে এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হবে। দীর্ঘসময় পর বাংলাদেশ সরকার করপোরেট ট্যাক্স কমানোর সুফল ভোগ করতে পারবে বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে আমাদের দেশের করপোরেট ট্যাক্স হার অনেক বেশি। তাই বিদেশি বিনিয়োগ পেতে হলে এই মুহূর্তে করপোরেট ট্যাক্স কমানো অত্যন্ত জরুরি।
এনবিআরকে দেওয়া সংগঠনের বাকি প্রস্তাবগুলো হলো- বিদ্যমান করদাতাদের ওপর করের বোঝা না চাপিয়ে করযোগ্য ব্যক্তিদের করের আওতায় আনার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৩৬ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকা উন্নিত করা। এনবিআরের কর গণনা ও রিটার্ন ফরম ততটা সহজ করা। বিনিয়োগ কর রেয়াতের জন্য নানা প্রকার হিসাব করতে হয় যা অত্যন্ত জটিল। তাই আয়ের ২৫ শতাংশের উপর সরাসরি ১৫ শতাংশ কর রেয়াত দেওয়া।
করের আওতা বাঙাতে সক্ষম ব্যক্তি চিহ্নিত করে নূন্যতম আয়কর আদায়ে কর জিডিপি অনুপাত এবং জাতীয় রাজস্ব বৃদ্ধিতে করের আওতা বাঙানোর জন্য জোরদার ও অর্থবহ জরিপ পরিচালনা করা। সকল ইটিআইএন ধারীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল সংখ্যা বৃদ্ধি করা। ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইন অনুযায়ী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট করদাতা অনুমোদিত প্রতিনিধি হিসেবে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এ বিধান ২০১২ সালের মূসক আইনের ১৩০ ধারায় সন্নিবেশিত হয়নি। আইসিএবি এ ধারায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের সংযোজন করার দাবি জানায়।
এছাড়া ১৯৯১ সালের আইন অনুযায়ী যে কোনো পর্যায়ে ১০ শতাংশ অর্থ জমার মাধ্যমে আপিল করার বিধান ছিল এবং সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নিকট আপিল করার জন্য কোনো প্রকার অর্থ জমা করার বিধান নাই। কিন্তু ২০১২ সালের মূসক আইন মোতাবেক প্রতিটি আপিল পর্যায়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের কালে ১০ শতাংশ অর্থ জমার বিধান রয়েছে যা অযৌক্তিক। আইসিবি এক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের বিধান বলবৎ রাখার প্রস্তাব করা হয়।