করোনাভাইরাসের কারণে হজযাত্রীগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো: আব্দুল্লাহ বলেছেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আতঙ্কিত হয়ে হজের নিবন্ধন থেকে বিরত থাকলে এবছর হজে গমন সম্ভব হবে না। হজযাত্রীগণ হজের টাকা জমা দিলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, সরকার সেই দায়িত্ব বহন করবে। আজ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী চলতি বছর হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তিগণকে নির্ধারিত সময়ে টাকা জমা দিয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, করোনাভাইরাস-এর প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর শতাধিক দেশ সর্তকতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। সৌদিআরব সতর্কতামূলভাবে ওমরাহ ভিসা ইস্যুকরণ সাময়িক বন্ধ রেখেছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে অনিশ্চয়তার কথা চিন্তা করে কেউ হজের নিবন্ধনে বিলম্ব করলে তাঁর এবছর হজযাত্রার সমস্যা হতে পারে। তবে হজের টাকা জমা দিলে সরকার তার নিরাপত্তা প্রদান করবে। তিনি বলেন, হজের টাকা জমা প্রদান করে নিবন্ধনের পরই সৌদি আরবে মোয়াল্লিম ফি নির্ধারণ, মক্কা-মদিনায় বাড়ি ভাড়া করা, আনুসাঙ্গিক ব্যয় মিটানোর জন্য সৌদি আরবে অর্থ প্রেরণের কাজ সম্পন্ন করতে হয়। এছাড়াও, হজে গমণের পূর্বে দেশে থাকা অবস্থায় একজন হজযাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা গ্রহণ, হজের প্রশিক্ষণ গ্রহণ, বিমানের টিকিট সংগ্রহ, ভিসা প্রসেসসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হয়। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী প্রেরণের নিমিত্ত ৭৮৮টি যোগ্য এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ২ মার্চ, ২০২০ তারিখ থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে ২০২০ সালের জন্য তালিকায় প্রকাশিত এজেন্সিসমূহ হজযাত্রী নিবন্ধন করছে।

তিনি বলেন, নিবন্ধন শেষে যথাসময়ে রাজকীয় সৌদি সরকারকে হজযাত্রীর সংখ্যাসহ অন্যান্য তথ্য জানাতে হবে। নিবন্ধিত হজযাত্রীদের পি আই ডি নম্বর প্রদান করতে হবে। হজযাত্রীদের সংখ্যানুপাতে বিমানের ফ্লাইট সিডিউল চূড়ান্ত করতে হবে। বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করতে হবে। হজ ব্যবস্থাপনার জন্য সৌদি আরবে মুয়াল্লিম নিয়োগ করতে হবে। হজযাত্রীদের আবাসনের জন্য বাড়ি বা হোটেল ভাড়া করতে হবে। সৌদি আরবে হজ ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও চুক্তি করতে হবে। সকল হজযাত্রীর জন্য ভিসার ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া পবিত্র হজে গমনের জন্য আমাদেরকে হজ ফ্লাইট শুরুর অন্তত ২ মাস পূর্বে বিস্তারিত প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। ওইসব কার্যাবলী সম্পন্ন করতে কমপক্ষে ২ মাস সময়ের প্রয়োজন। প্রস্তুতিতে আমাদের কোন ধরনের ত্রুটি থাকলে হজে গমন বিঘ্নিত হয়ে পড়তে পারে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৯ জিলহজ্জ, ১৪৪১ হিজরি মোতাবেক ৩০ জুলাই, ২০২০ ইংরেজি এ বছরের পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। ০১ জিলক্বদ, ১৪৪১ হিজরি, ২৩ জুন ২০২০ তারিখ হজ ফ্লাইট শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। প্রতিমন্ত্রী জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভা কর্তৃক এ বছরের হজ প্যাকেজ অনুমোদিত হয়েছে। এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট তিনটি প্যাকেজ ঘোষিত হয়েছে। প্যাকেজ-১ এ সর্বমোট ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্যাকেজ-২ এ সর্বমোট ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং প্যাকেজ-৩ এ সর্বমোট ৩ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মত এবছরই প্যাকেজটি চালু করা হয়েছে। বেসরকারি হজ এজেন্সিসমূহের জন্যও ৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকার একটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বেসরকারি এজেন্সিসমূহ সরকারি ব্যবস্থাপনার ৩টি প্যাকেজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেও প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে। ইতিমধ্যে বেসরকারি হজ এজেন্সিসমূহের সংগঠন হাবও দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তিনি আরও বলেন, এবছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১ শত ৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লক্ষ ২০ হাজারসহ মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার হজযাত্রী হজে যেতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ। এ বছর যে সকল হজযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০২০ কোটা পূরণ হওয়ার কারণে ২০২১ সালে বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে প্রাক নিবন্ধন করেছেন, তারা ইচ্ছে করলে এবছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গমনের সুযোগ পাবেন। সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ) এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান