চীনে থেকে সংক্রমণ শুরু হলেও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনাভাইরাস। মারাত্মক ছোঁয়াচে এ ভাইরাসের কবল থেকে আরও মানুষকে রক্ষায় সোমবার বিশ্বের ১.৫ বিলিয়ন অর্থাৎ বিশ্বের পাঁচভাগের একভাগ মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চীন তার পরিস্থিতি উন্নতি করতে পারলেও প্রাণঘাতী ভাইরাসটির কেন্দ্র এখন ইউরোপে। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ইউরোপ আমেরিকায় বেড়েছে মাস্ক, ভেন্টিলেটরসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামের চাহিদা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের জন্য শুরু হওয়া চলতি সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ইতিমধ্যে তার সদস্য দেশগুলোকে শক্তিশালী, সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ডব্লিউএইচও’র প্রধান টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, ভাইরাসটিতে প্রথম ১ লাখ আক্রান্ত হতে সময় লেগেছিল ৬৭ দিন। কিন্তু পরবর্তীতে ২ লাখ থেকে ৩ লাখ হতে সময় লেগেছিল মাত্র চার দিন। এমন পরিস্থিতিতে ‘আমরা অসহায়ের মতো নীরব হয়ে থাকতে পারি না।’
যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল নিউইয়র্ক। প্রায় ৮.৪ মিলিয়ন জনসংখ্যার এই নগরকে বলা হচ্ছে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে বড় কেন্দ্র। নিউইয়র্কে এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন এবং এতে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গোটা ইউরোপে করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল ইতালি আর দেশটিতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা লম্বার্দি অঞ্চলে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া ইউরোপে অন্যান্য দেশ স্পেন, ফ্রান্স ও জার্মানিও করোনাভাইরাসের ভয়াবহ থাবার মুখে পড়েছে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সোমবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৩৩ জন আক্রান্তের তথ্য জানিয়েছে সরকার। যাদের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে এবং পাঁচজন সুস্থ হয়েছেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫১৫ জনে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, নভেল করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯৬৫ জন। এদের মধ্যে বর্তমানে ২ লাখ ৬০ হাজার ৩৮১ জন চিকিৎসাধীন এবং ১২ হাজার ৬২ জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া করোনাভাইরাস আক্রান্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৮৪ জনের মধ্যে ১ লাখ ২ হাজার ৬৯ জন (৮৬ শতাংশ) সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং ১৬ হাজার ৫১৫ জন (১৪ শতাংশ) রোগী মারা গেছেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস। সূত্র-ই্উএনবি
আজকের বাজার/ আখনূর রহমান