করোনার বিরুদ্ধে ২ বছর সুরক্ষা দিতে পারবে রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ভি’

রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ভি’ ভ্যাকসিন ৯৬ শতাংশ কার্যকর উল্লেখ করে, এই টিকার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গামালেয়া রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিন দীর্ঘ দুই বছর সুরক্ষা দিতে পারবে।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি কেবল পরামর্শ দিতে পারি, কারণ আরও পরীক্ষামূলক তথ্য প্রয়োজন। আমাদের ভ্যাকসিনটি ইবোলা ভ্যাকসিনের জন্য ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্মে তৈরি করা হয়েছিল। এই মুহূর্তে প্রাপ্ত পরীক্ষামূলক তথ্যগুলো প্রমাণ করে যে এই একই ধরনের ভ্যাকসিন দুই বছরের জন্য বা সম্ভবত আরও বেশি সময় সুরক্ষা দেবে।’ খবর: রুশ বার্তা সংস্থা তাস।

রাশিয়ার এই বিজ্ঞানীর মতে, স্পুটনিক ভি ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। ভ্যাকসিন নেয়া বাকী চার শতাংশ মানুষের মধ্যে সর্দি, কাশি ও হালকা জ্বরসহ করোনার নানা উপসর্গ থাকবে, তবে তাদের ফুসফুস সংক্রমিত হবে না।

অনৈতিক ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাশিয়ার স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনারও ব্যাখ্যা করেন গিন্টসবার্গ।

তিনি বলেন, ‘প্রথম কারণ হলো এই ভ্যাকসিনের বাজার সম্ভবত কয়েকশো বিলিয়ন ডলারের। করপোরেশন ও এই ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা শুধুমাত্র লাভের জন্য লড়াই করছেন।’

অন্যান্য কারণগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বলেন তিনি।

গিন্টসবার্গ বলেন, ‘সম্প্রতি একদল ভ্যাকসিন গবেষক আমেরিকান মহাদেশের একটি দেশে নির্বাচনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সব মিলিয়ে নির্বাচন শেষ হওয়ার তিন-পাঁচদিন পরই তারা একটি ভ্যাকসিন তৈরি করার ঘোষণা দেন। এর আগে, ভ্যাকসিনটি প্রস্তুতও ছিল না।’

গত ১১ আগস্ট রাশিয়ার নিবন্ধিত ‘স্পুটনিক ভি’ বিশ্বের প্রথম করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ভ্যাকসিনটি তৈরি করে রুশ প্রতিষ্ঠান গামালেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি।

এর আগে নভেম্বর মাসে গামালেয়া রিসার্চ সেন্টার, রাশিয়া ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ) ও রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনের ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং টিকার প্রথম ডোজ দেয়ার ৪২ দিন পর পাওয়া প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এটি নির্ধারিত হয়েছে।

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রথম দফায় স্পুটনিক ভ্যাকসিনের একটি ডোজ দেয়ার ২৮ দিন পর এর কার্যকারিতা ছিল ৯১.৪ শতাংশ এবং ৪২ দিন পর টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগের পর এর কার্যকারিতা পাওয়া গেছে ৯৫ শতাংশ।