করোনার ভয়ে বন্ধের পথে না’গঞ্জের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক

নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ইতোমধ্যেই কর্মীদের করোনা আক্রান্তের ফলে বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো চালু রয়েছে সেগুলোও বন্ধ করে দেয়ার পথে হাঁটছেন হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মালিকরা।

সর্বশেষ তথ্যমতে, শহরে প্রায় ৪২টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এরমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সম্প্রতি ১০টি সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম, সদর জেনারেল হাসপাতালের একজন ডাক্তার, একজন নার্স, একজন ওয়ার্ড বয়, একজন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার, খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসক, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পিএ সিদ্দিক, হাসপাতালের আরও ১০ থেকে ১৫ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

এছাড়া শহরের পলি ক্লিনিকের মালিক ও বিএমএ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ডা. শাহনেয়াজসহ শহরের অনেকগুলো ক্লিনিক ও হাসপাতালের চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

মেডিপ্লাস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বসাক নামে এক ডাক্তার ও পলি ক্লিনিকের ওটি বয় অকিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।  পলি ক্লিনিকের আরও চারজন কর্মীর করোনা পরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিআইটি এলাকার আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালের একজন করোনা রোগী ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ও শাহীন জেনারেল হাসপাতালের ম্যানেজার সোহাগ আইসোলেশনে আছেন। একতা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সকল কর্মী হোম কোয়ারেন্টাইনে ও করতোয়া মেডিকেলসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানেরও একই অবস্থা।

এসব কারণে ইতোমধ্যেই অনেকগুলো ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ অবস্থায় কিছুটা স্থবিরতা চলে এসেছে জেলার স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে।

এসব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের নানাভাবে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছেন তারা। অনেকেই রোগ গোপন করে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে এ বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দেন তাদেরকে।

বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শাহীন মজুমদার বলেন, ‘আমাদের এখানে ৪২টি স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে যার মধ্যে প্রায় ১০টি ইতোমধ্যে লকডাউন করা হয়েছে। এদের কর্মীরা কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত আবার কয়েকজন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।’

হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মীরা আক্রান্ত হয়ে পড়ায় এগুলো খোলা রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন,  ‘করোনা আক্রান্ত বা যারা করোনার উপসর্গ নিয়ে আসেন তাদেরকে পরীক্ষা করার আগে চিহ্নিত করতে না পারায় তাদের সংস্পর্শে এসে কর্মীরাও আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন। আমাদের কর্মীরা গ্লাভস, মাস্ক ও নিরাপত্তা সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করলেও করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে সাধারণ রোগীরা ভাইরাসে আক্রান্তের হুমকির মুখে পড়বেন।’

‘এ অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ করে আমরা দ্রুত সবগুলো ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলতে চেষ্টা করব, এজন্য সংশ্লিষ্টদের সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।