করোনা ঝুঁকিতে কুমিল্লার প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য খাতের ১৫ হাজার কর্মী

কুমিল্লায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ তিন বিভাগের ১৫ হাজারেরও বেশি সদস্যের মধ্যে অধিকাংশের পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বা বিশেষ সুরক্ষিত পোশাক নেই। এ নিয়ে তাদের মাঝে বিরাজ করছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক। চলতি মাসে কুমিল্লায় ১৫ হাজারেরও বেশি প্রবাসী ফিরেছেন। কিন্তু হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন মাত্র এক হাজার ৬১৮ জন। এতে ঝুঁকি আরও বাড়ছে। সূত্র মতে, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনে কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন এক হাজার ১৩২ জন। জেলা পুলিশে রয়েছেন দুই হাজার ৪০৪ জন। সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগে জনবল আছে তিন হাজারেরও বেশি। বেসরকারি সাড়ে তিন শতাধিক হাসপাতালে রয়েছেন আট হাজারের ওপর কর্মকর্তা-কর্মচারী। আর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছেন চার শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের মাঠ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যত বড় দুর্যোগ আসুক আমাদের মাঠে থাকতে হবে। কিন্তু আমাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা ঠিক না থাকলে কীভাবে কাজ করব?’ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের চার শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। যে পরিমাণ পিপিই এসেছে তা পর্যাপ্ত নয়। তবে আমাদের আইসিইউ চালু করা জরুরি। আইসোলেশন বেড থাকলেও আইসিইউ ছাড়া কাউকে চিকিৎসা দেয়া কঠিন।’

চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক ডা. আতাউর রহমান জসিম বলেন, ‘কুমিল্লায় ১৫ শ চিকিৎসক রয়েছেন। চিকিৎসক ও হাসপাতাল স্টাফদের পিপিই জরুরি। সরকারি হাসপাতালে কিছু পিপিই এসেছে। বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নিরাপত্তা নিতে বলা হয়েছে। আমাদের সংগঠন থেকেও কিছু পিপিই তৈরি করছি।’ সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, মাঠে স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের থাকতে হচ্ছে। সরকারের দিকে না তাকিয়ে থেকে প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সবার নিরাপত্তার ন্যূনতম ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। বেসরকারি চিকিৎসক সমিতি কুমিল্লার সভাপতি ও বেসরকারি ক্লিনিক মালিক সমিতি কুমিল্লার কোষাধ্যক্ষ ডা. একেএম আবদুস সেলিম বলেন, ‘চিকিৎসক ও স্টাফরা নিরাপদ না হলে কীভাবে সেবা দেবেন? বেসরকারি ক্লিনিক মালিক ও চিকিৎসকদের প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে পিপিই তৈরির জন্য বলা হয়েছে।’

সিভিল সার্জন ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কিছু পিপিই পেয়েছি। তা মাঠে পাঠিয়ে দিচ্ছি। সুরক্ষার বিষয়ে বেসরকারি ক্লিনিকের চিকিৎসক ও প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের উদ্যোগ নিতে হবে।’ কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘পিপিই তৈরি করার জন্য নির্দেশনা এসেছে। তবে বরাদ্দ নেই। আমাদের কিছু রেইন কোর্ট আছে সেগুলো ব্যবহারের উপযুক্ত করছি।’ এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ে কুইক রেসপন্স টিম করা হয়েছে। এদিকে সবাইকে ব্যক্তি উদ্যোগে পিপিই তৈরির জন্য বলা হয়েছে। তারা কাপড় কিনে বানিয়ে ফেলবে। সূত্র- ইউএনবি

আজকের বাজার/ শারমিন আক্তার