করোনা মহামারীর নতুন কেন্দ্র ব্রাজিল

করোনা মহামারীর নতুন এপিসেন্টার বা কেন্দ্র বলা হচ্ছে, লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলকে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায়, লাশ মিলছে ঘরে ঘরে। যেভাবে প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে, তাতে আগস্টের শুরুতেই দেশটিতে প্রাণহানি ১ লাখ ২৫ হাজার ছাড়াতে পারে। এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের একদল গবেষক।

করোনায় যুক্তরাষ্ট্রের পর এখন হটস্পট লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। পেলে, রোনালদো, নেইমারদের দেশে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও প্রাণহানি। সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ অবস্থা মানাউসের।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক মৃত্যের মেয়ে এলিট গ্রাসেস বলেন, মারা যাওয়ার আগে তার নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো। বাবা ঘর থেকেই বের হননি, করোনা কী না তাও জানি না।

ডাক্তার স্যান্দোকান বলছেন, সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে, মানুষ বুঝতেই চাচ্ছে না এটি মহামারী।

আরেকজন স্থানীয় এডভোলদো আরাওজো জানান, গভর্নর সবকিছুতে হেরফের পাকিয়েছেন, মৃত্যুর হার নিয়েও গোলমাল আছে। এমনকি শ্বাসকষ্ট কিংবা অন্য রোগে মারা গেলেও বলা হচ্ছে কোভিড-১৯।

মানাউসের নাজুক পরিণতির জন্য দায়ি করা হচ্ছে কম টেস্টের বিষয়টিকে। গেল দুমাসে অ্যামাজন রাজ্যের শহরটিতে টেস্টের হার মাত্র ৫ শতাংশ; অথচ এরই মধ্যে করোনা কেড়ে নিয়েছে শহরের ৪ হাজার ৩শ মানুষের প্রাণ। হাসপাতালে শয্যা না থাকায় লাশ মিলছে ঘরেঘরে। মৃতের সংখ্যা উর্ধ্বমুখি হলেও, ভাবলেশহীন দেশটির প্রেসিডেন্ট। তার কাছে এটি লিটল ফ্লু।

অ্যামাজনের গর্ভনর উইলসন লিমা বলেন, সবকিছু বন্ধ করে অর্থনীতিকে তো তলানিতে নিতে পারি না। এমনিতেই শহর ৩০ দিন লকডাউন ছিলো। অর্থনীতি বাচাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে লকডাউন শিথিল করা হয়েছিলো, এতেই হয়ত ভাইরাস ভয়াবহভাবে ছড়িয়েছে।

ব্রাজিলিয়ানদের একটি বড় অংশ সামাজিক দূরত্ব অমান্যের সঙ্গে মানছেননা সুরক্ষা বিধি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর মূল কারণ ফেডারেশন সরকার ও রাজ্যগুলোর বিপরীতমুখী আচরণ।

ব্রাজিলের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা অ্যাডেল বেনজাকান বলেন, প্রতিদিন ফেডারেশন সরকারে কাছ থেকে বিভিন্ন বার্তা আসে যাকিনা শহর ও রাজ্যগুলোর ব্যাবস্থাপনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তো আমরা আসলে জনগনের কাছে কি তথ্য পাঠাবো?

২৩ মার্চ থেকে অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয় ব্রাজিলের মানাউসে। খোলা ছিলো শিল্প কলকারখানা। দেয়া হয়নি পুরো লকডাউন।