অবশেষে শ্রমিকদের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে শ্রম আইন সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে কাতার। নতুন আইনে সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করার চিন্তা-ভাবনাও করছে দেশটির সরকার। ২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য ওঠে আসে।
এতে বলা হয়, ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ বিষয়ে শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক তোপের মুখে পড়েছিলো কাতার। ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছেন কাতার সরকোররে কর্মকর্তারা। একদিন পরই এমন ঘোষণা আসে।
কাতারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন। সংস্থাটির মহাসচিব শ্যারন বুরো বলেন,এর মধ্যদিয়ে কাতারে আধুনিক দাসপ্রথার ইতি ঘটছে।
নভেম্বরের মধ্যে কাতারে এই সংস্কারের সময়সীমা বেধে দিয়েছে আইএলও। ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত কর্মকর্তারা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
আগে কাতারে সব বিদেশি শ্রমিকের নিয়ন্ত্রক ছিলো তার কাফিল বা স্পন্সর। বেতন ভাতা ঠিক সময়ে না পেলে, কিংবা শোষণের শিকার হলে চাকরি ছাড়ার উপায় নেই। কিম্বা ভাল চাকরির সুযোগ পেলেও কাফিল বদলানোর সুযোগ নেই। দেশত্যাগেও বাধা ছিলো তাদের । কাফালা’ বলে পরিচিত এই ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা হবার পর গত ডিসেম্বরে তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় কাতার।
যে সব বিষয় পরিবর্তন আসছে : ১. সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ। ২. চাকরি পরিবর্তন করতে চাইলে, সেটি আর অসম্ভব নয়। ৩. কাতারের শ্রম অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে একজন শ্রমিক কাফিল বা স্পন্সর পরিবর্তন করতে পারবেন। ৪. সবগুলো চুক্তিপত্র একটি কর্তৃপক্ষের নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ৫. কর্মীরা কর্মস্থলে নিজেদের কমিটি গড়তে পারবেন।
তবে এ প্রস্তাবনা কবে বাস্তবায়ন করা হবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। এখনও অনেক কাজ বাকি আছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে। আন্তর্জাতিক ট্রেড উইনিয়ন কাতারের শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেন। ২০২২ বিশ্বকাপের জন্য কাজ করতে গিয়ে অন্তত ১২০০ কর্মী নিহত হন বলে ২০১৩ সালে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছিলো আইটিউইসি।
কাতারে প্রায় ২০ লাখ অভিবাসী শ্রমিক রয়েছেন। বেশিরভাগই বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর। বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার কাতারে কাজ করেন লাখ লাখ শ্রমিক। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে কাতারে শ্রমিক পাঠানো হয় মোট ১ লাখ ২০ হাজার ৩৮২ জন।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২৬ অক্টোবর ২০১৭