কাতারের সঙ্গে সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নেয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সৌদি আরব তা বাতিল করেছে। এর আগে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানির সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান টেলিফোনে আলাপ করেন। ওই ফোনালাপে কাতার ও চারটি আরব রাষ্ট্রের মধ্যে চলমান সংকট সংলাপের মাধ্যমে নিরসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা।
৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার কাতারের আমির সৌদি যুবরাজকে ফোন করেন এবং তিনি সংলাপের মাধ্যমে আরব রাষ্ট্রগুলোর দাবি নিয়ে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ফোনালাপে কাতারের আমির সবার স্বার্থ রক্ষার জন্য চার আরব রাষ্ট্রের দাবি নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসার প্রস্তাব নিয়েছেন বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের সরকারি বার্তা সংস্থা এসপিএ।
কাতার এবং সৌদি আরবের মধ্যে সংকট তৈরির তিন মাসের মধ্যে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কোনো ফোনালাপ হওয়া সত্ত্বেও এটি দৃশ্যত ব্যর্থ হয়ে গেল মূলত প্রটোকল সংকটের কারণে। কাতারের পক্ষ থেকে ফোন করা হলেও কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সে কথা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে -এমনটি দাবী করা হচ্ছে সৌদি আরবের গণমাধ্যমে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে এ ফোনালাপ হয়েছে বলে জানিয়েছে কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কিউএনএ। টেলিফোনে কাতারের আমির ও সৌদি যুবরাজ দুজনই পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা পিজিসিসি’র মধ্যে ঐক্য এবং স্থিতিশীলতা ধরে রাখার জন্য সংলাপের মাধ্যমে চলমান সংকটের অবসান ঘটানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ সময় সৌদি যুবরাজ প্রস্তাব করেন, সংকট নিরসনের জন্য দু দেশ দু জন বিশেষ দূত নিয়োগ দেবে যাতে কারো সার্বভৌমত্বের ওপর প্রভাব না পড়ে।
সম্ভাব্য এ সফলতার বিষয়ে সৌদি বার্তা সংস্থা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল, শুক্রবার কাতারের আমির সৌদি যুবরাজকে ফোন করে সংকট নিরসনের বিষয়ে সংলাপে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশরের সঙ্গে আলোচনা করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও উল্লেখ করে এসপিএ। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটি জানায়, কাতারের সরকারি বার্তা সংস্থা ফোনালাপের বিষয়ে যে বিবৃতি প্রকাশ করেছে তাতে সত্য বিকৃত হয়েছে। এ কারণে কাতারের পক্ষ থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করে নতুন বিবৃতি না দেয়া পর্যন্ত রাজতান্ত্রিক সৌদি আরব ঘোষিত এ সংলাপ স্থগিত করছে।
এর আগে কাতার ও সৌদি নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া্, সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ শেখ মুহাম্মাদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউজ। ফোনালাপে ট্রাম্প আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও ইরানের পক্ষ থেকে আসা হুমকি মোকাবেলার জন্য পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলো এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে ঐক্য ফিরিয়ে আনার কথা বলেন। এছাড়া, সবাইকে রিয়াদ সম্মেলনের ঘোষণাপত্রও অনুসরণ করতে হবে বলে ট্রাম্প জোর দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন সন্ত্রাসবাদে মদদ ও ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অভিযোগসহ কয়েকটি অভিযোগে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর। তবে কাতার এসব অভিযোগ চূড়ান্তভাবে নাকচ করে এবং এর পরপরই চার আরব দেশ কাতারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে।
সূত্র : পার্স নিউজ
আজকের বাজার : এমএম / ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭