কারিগরি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রকল্পে বিনিয়োগের আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করার অংশ হিসেবে দেশের শিল্পপতি, বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদেরকে কারিগরি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে ‘স্কিলস কম্পিটিশন-২০১৮’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ‘স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং অ্যানহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (স্টেপ)’ এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

২০১৪ সাল থেকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশের লক্ষ্যে স্টেপ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার যে কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করেছে তার প্রতিফলন আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় দৃশ্যমান। কারিগরি শিক্ষায় এখন ভর্তি হার ১৪% এর অধিক। সরকার এই হার ২০২০ সালের মধ্যে ২০% ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০% করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। যদি আপনারা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্ভাবনী প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন তবে তারা আরও বেশি বেশি আবিষ্কারের দিকে মনোযোগ দেবে এবং দেশ, কাল ও বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন প্রকল্প উদ্ভাবন করবে। এতে করে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। শিঘ্রই আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো। আর এজন্য আমাদেরকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষা হওয়া উচিৎ দক্ষতা নির্ভর। কারণ দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে শিক্ষা নিয়ে অনেককেই বেকারত্বের যন্ত্রণা মোকাবিলা করতে হয়। বর্তমান সরকার শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আর এর মধ্যে অগ্রাধিকার হচ্ছে কারিগরি শিক্ষা।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দক্ষতা নির্ভর কারিগরি শিক্ষাই কেবল পারে দেশকে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব থেকে মুক্ত করে সরকার-নির্ধারিত সময়ে মধ্যম ও উচ্চ আয়ের দেশে রূপান্তর করতে। শুধু দক্ষতা এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং কারিগরি শিক্ষাকে আধুনিকায়নের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। স্কিলস কম্পিটিশন আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশের পথ প্রশস্ত করা, শিল্প-সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা এবং কলকারখানাসমূহকে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার মধ্য দিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখা।

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ^ ব্যাংকের সিনিয়র অপারেসন্স অফিসার ড. মোখলেছুর রহমান এবং স্টেপ প্রকল্প পরিচালক এবিএম আজাদ।

পরে মন্ত্রী প্রতিযোগিতার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। ‘স্কিলস কম্পিটিশন ২০১৮’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিগত চার বছরের চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণকারী প্রায় ১০০টি উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শন করা হয়। উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলোর বাণিজ্যিক উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বিভিন্ন শিল্পোদ্যোক্তা ও কলকারখানার মালিক প্রাথমিকভাবে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।

আজকের বাজার/এমএইচ