কেরাণীগঞ্জে স্বপ্নের বাড়িতে স্বস্তির জীবন আলাউদ্দিনের

ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের আলুকান্দা এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ মো.আলাউদ্দিন। কিছুদিন আগেও ছোট একটি ঝুপড়ি ঘরে কষ্টে দিন কাটত আলাউদ্দিন ও তাঁর পরিবারের। বৃষ্টি এলে ফুটো ছাদ দিয়ে পানি পড়ত। তবে জীর্ণ বাড়িতে থাকার দিন এখন অতীত হয়েছে তার। নিজের এক চিলতে জমিতে পাকা বাড়ি করে দিয়েছে সরকার। এমন একটা বাড়িতে থাকতে পেরে কষ্টের কথা ভুলে গেছেন আলাউদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা। স্বপ্নের বাড়িতে তাঁদের জীবন এখন স্বস্তির।

গত অক্টোবর মাসে আলাউদ্দিন তার নতুন পাকা বাড়ি বুঝে পান। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, এমন একটা পাকা বাড়িতে থাকতে পারব জীবনেও কল্পনা করিনি। নিজের একখন্ড ভিটায় বিনা মূল্যে বাড়িটি তৈরি করে দেয় সরকার। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। তিনি গরিবদের কথা মনে রাখেন।

আলাউদ্দিনের মতো জমি আছে তবে বাড়ি করার সামর্থ্য নেই উপজেলার এমন আরো ১২টি গৃহহীন ও হতদরিদ্র পরিবার সরকারের কাছ থেকে বাড়ি উপহার পেয়েছে। অক্টোবর মাসে এসব গৃহহীনদের নতুন বাড়ি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন গ্রামীণ অবকাঠামোগত রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) এবং অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দে গৃহহীনদের জন্য পাকা বাড়িগুলো তৈরি হয়েছে। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।

প্রায় ২ শতাংশ জমিতে (৮০০ বর্গফুট) তৈরি এসব টিনশেড সেমিপাকা বাড়িতে একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট ও দুটি থাকার কক্ষ রয়েছে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, সোলার প্যানেল এবং পাশে আলাদা টয়লেটও রয়েছে।

এ উপজেলার দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ প্রাপ্ত অন্যন্যরা হলেন, কোন্ডার বীরবাঘৈর এলাকার শেখ নাহার ও পানগাও এলাকার মতি রানী, হযরতপুর ইউনিয়নের ইটাভাড়া এলাকার জাকিয়া সুলতানা,কলাতিয়া কুঠিবাড়ি এলাকার জহুরুল ইসলাম,তারানগরের ভাওয়াল মনোহরিয়া এলাকার মোবারক,শাক্তার মোবারক বেপারীর গ্রামের সিরাজুল হক, রোহিত পুরের রীণা রাণী সরকার,বাস্তা ইউনিয়নের আব্দুল কাদির, কালিন্দী ইউনিয়নের মো.ওসমান গনি,শুভাঢ্যার সামসুল হক,তেঘরিয়ার মজিদ বেয়ারা এলাকার ভোলানাথ দাস ও মুসলিম নগরের ফাতেমা বেগম।

এদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তাদের অনেকেই জানিয়েছেন যে, জীবনে কখনো পাকা বাড়ির মালিক হব স্বপ্নেও ভাবিনি। তবে এখন তা বাস্তবতা। পাকা বাড়ি পাওয়াতে এখন তাদের দুশ্চিন্তা কমেছে। এ জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।

কেরাণীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী,‘গ্রাম হবে শহর’এ কর্মসূচির আওতায় এ উপজেলার দশটি ইউনিয়নে ১৩টি পাকাবাড়ি তৈরি হয়েছে। গত ১৩ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে সুবিধাভোগীদের নিকট বাড়িগুলোর কাগজপত্র ও চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে।

কেরাণীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত দেবনাথ জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তালিকা যাচাই বাছাই করে অতিদরিদ্র, গৃহহীন ও দুস্থদের মাঝে বাড়িগুলো বরাদ্ধ হয়েছে।

কেন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান মুহম্মদ সাইদুর রহমান চৌধুরী ফারুক বলেন, সরকারের সফল কর্মসূচির মধ্যে বিনা মূল্যে হতদরিদ্রদের মাঝে পাকাবাড়ি বরাদ্ধের এ প্রকল্পটি অন্যতম। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী এ প্রকল্প এলাকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তার মতে গ্রামে গ্রামে এ প্রকল্পের বিস্তৃতি ঘটলে সরকারের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হবে। মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে সমাজের পিছিয়ে পড়া বিপুল জনগোষ্ঠী। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান