যশোরের কেশবপুর এলাকার প্রায় কয়েকশ নারী পানের খিলির জন্য সুপারি টুকরো করার কাজ করে পরিবারে স্বচ্ছলতা এনেছেন। উপজেলার খতিয়াখালি গ্রামের ব্যবসায়ী লক্ষণ দাস, তার ছেলে উত্তম দাস ও আনন্দ দাস নারীদের এই কাজের সুযোগ করে দেন। এতে করে গ্রামের গৃহবধূরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী আনন্দ দাস জানান, আমি ও আমার বাবা লক্ষণ দাস দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সুপারি কিনে এনে পানের খিলির জন্যে সুপারি টুকরো করতে গ্রামের নারীদের কাছে সরবরাহ করি। সুপারি কেটে গ্রামের অসহায় মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সুপারির ব্যবসা দেখে গ্রামের পার্বতী রানী দাস, মো. তুহিনসহ অনেকেই এ ব্যবসা শুরু করেছেন।
সুপারি ব্যবসায়ী উত্তম দাস বলেন,‘একজন নারী প্রতি কেজি সুপারি টুকরো করার জন্যে ১০ টাকা পারিশ্রমিক পান। তারা প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কেজি সুপারি টুকরো করে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আয় করছেন। তাদের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাগুরাডাঙ্গা, বালিয়াডাঙ্গা, সুজাপুর, ব্রহ্মকাটি, রামচন্দ্রপুর, ব্যাসডাঙ্গা, বাকাবর্শী, কন্দর্পপুর ও বড়েঙ্গাসহ ১৫ গ্রামের প্রায় ১ হাজার নারী এ কাজ শুরু করেছেন।’ এছাড়া স্কুল-কলেজের ছাত্রীরাও এখন লেখাপড়ার পাশাপাশি সুপারি টুকরো করার কাজ করছেন। তারা পড়াশোনার খরচ মিটিয়ে বাবা মায়ের হাতে তাদের পারিশ্রমিকের অর্থও তুলে দিতে পারছেন।
খতিয়াখালি গ্রামের ছায়া বিশ্বাস জানান, তিনি প্রতিদিন সুপারি টুকরো করে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আয় করেন। যা দিয়ে তিনি ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ মিটিয়ে অবশিষ্ট টাকা স্বামীর হাতে তুলে দেন। একইভাবে রাখি দাস, রীনা দাস, শিখা দাস, মিতা দত্ত, পারভীনা খাতুনের মতো নারীরাও সুপারি টুকরো করে প্রতি মাসে ৫-৬ হাজার টাকা আয় করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। কেশবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে এলাকার মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। সুপারি কেটে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি। সূত্র-ইউএনবি
আজকের বাজার/আখনূর রহমান