কোটা সংস্কার ও আন্দোলন কারীদের উপর পুলিশের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে আগামী ২৫ মার্চ শিক্ষা সনদ গলায় ঝুলিয়ে রাস্তা ঝাড়ু দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে তারা। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজু ভাষ্কর্য থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল করে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারীরা।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে একত্রিত হয়ে টিএসসি,ভিসি চত্বর, সেডো,কলাভবন এবং ডাকসুসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে মিছিল করেন তারা। এ সময় আন্দোলন কারীদেরকে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, আমাদের দাবি মানতে হবে কোটা সংস্কার করতে হবে, সংস্কারে নাই ছাড়, মামলা করো প্রত্যাহারসহ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা যায়। সেখানে বক্তব্য দেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
এছাড়াও বিক্ষোভকারীরা নানা রকম প্লেকার্ড, ব্যানার এবং কোটা সংস্কারের দাবির উপর লিখিত পট্টি মাথায় বেঁধে বিক্ষোভ করে। এ বিক্ষোভে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
এ ছাড়া নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। আগামী ২৫ মার্চ তারা গলায়, কাঁধে বা হাতে সব শিক্ষা সনদ নিয়ে রাজু ভাস্কর্য থেকে শহীদ মিনারে যাওয়ার রাস্তা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করবেন। আন্দোলনকারীরা জানান, অহিংস প্রতিবাদ হবে। এভাবেই তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ চান।
আন্দোলনকারীদের ৫ দফা দাবি হল, কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা এবং চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা।
গত ১৪ মার্চ কোটা সংস্কারের দাবিতে চাকরি প্রত্যাশীদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে। ৫ দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে হাইকোর্ট মোড়ে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে অনেকে আহত হন।
পরবর্তীতে সেখান থেকে পুলিশ ৫ জনকে আটক করে। পরে আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে আনতে গেলে আরো ৫০ জনকে আটক করে রমনা থানা-পুলিশ। এর প্রতিবাদে ওই দিন সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল করলে একপর্যায়ে তাদের দাবির মুখে পুলিশ আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেয়।
পরদিন পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা এবং গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ৭০০-৮০০ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করে পুলিশ। শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মির্জা মো. বদরুল হাসান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
আজকেরবাজার/এস