সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৬ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার ২০ ডিসেম্বর সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।
এর মধ্যে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ‘মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য ৫টি লটের লটের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক সুপারিশ করা ৫টি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সেবা ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকিউরমেন্ট অব সিভিল ওয়ার্কস কন্ট্রাক্টর ফর ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের ২টি প্যাকেজে কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুইটি প্যাকেজে মোট খরচ হবে ৩৯০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
একই বিভাগের অধীনে ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়ের মেঘনা সেতু এবং মেঘনা-গোমতি সেতুর টোল প্লাজা অনলাইনে মনিটরিং বাড়ানোসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চালুর পাশাপাশি অন্যান্য সেবা ক্রয় সংক্রান্ত কাজের এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে অতিরিক্ত ওজনবাহী যানবাহন থেকে আদায়কৃত মাশুল থেকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড (সিএনএসএল)-এর জন্য একটি যৌক্তিক দর নির্ধারন সম্পর্কিত ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। কমিটি। প্রকল্পটিতে মোট কাজের অতিরিক্ত ১৪ শতাংশ কাজ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী ২য় সেতু নির্মাণ এবং বিদ্যমান সেতু পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ‘দি কন্সট্রাকশন অব কাঁচপুর, মেঘনা অ্যান্ড গোমতি সেকেন্ড ব্রীজেস অ্যান্ড রিহ্যাবিলাইটেশন অব এক্সিশটিং ব্রিজেস’ কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৯৬৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এই প্রকল্পে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে এক লাখ টাকা কম ব্যয় হয়েছে।
সেতু বিভাগের অধীনে পিপিপির আওতায় নির্মানাধীন ঢাকা এলিভেটিড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য ‘এ’ ব্লকে প্রতিটি ১০০০ বর্গফুটের আয়তন বিশিষ্ট ৬টি ১৪ তলা ভবন নির্মানের চুক্তি সইয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩৪৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
একই বিভাগের অধীনে পিপিপির আওতায় নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটিড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য ‘বি’ ব্লকে প্রতিটি ৮০০ বর্গফুটের আয়তন বিশিষ্ট ৬টি ১৪ তলা ভবন নির্মানের চুক্তি সইয়ের প্রস্তাবটিও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে অতিরিক্ত সচিব জানান। প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ২৭৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
সেতু বিভাগের আওতায় কন্সট্রাকশন, সাপ্লাই অ্যান্ড ইন্সটলেশন অব অ্যানসিলারি ফ্যাসিলিটিজ ফর রিসেটেলমেন্ট ভিলেজ অব ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিপিপি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ১৬৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারন রাহশাহী-রংপুর বিভাগীয় কার্যক্রম-২ (সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের একটি প্যাকেজের আওতায় ৩টি ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন নির্মাণ সংক্রান্ত ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতাযন বোর্ডের ‘বিতরণ ব্যবস্থার ক্ষমতাবর্ধমান, পুনর্বাসন ও নিবিড়করণ (রাহশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ)’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজের আওতায় ৩৪.৭৪৬ কিলেমিটার কন্ডাক্টর ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১৩৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’-এর আওতায় রূপকল্প-৩ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন কসবা-১.জমালপুর-১,শৈলক’পা-১ তিনটি এক্সপ্লোরেশন ওয়েলস-এর জন্য মাড টেস্টিং অ্যাপারেটারস/ইক্যুইপমেন্ট অ্যান্ড রিএজেন্ট ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬১ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের জন্য ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন,২০১০’ এর আওতায় রূপকল্প -১ ড্রিলিং প্রজেক্ট এর ৫টি কূপের কার্যক্রমের জন্য হেভি ওয়েট ড্রিল পাইপ এবং ড্রিল কলারসহ বিভিন্ন মালামাল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১০ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’এর আওতায় রূপকল্প-১ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন সালদা নর্থ-১ অনুসন্ধান কূপ খননের কাস্টিং অ্যাক্সেসরিজ এবং লিনার হ্যাংগার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৯৮ লাখ ২৮ হাজার টাকা।
‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের জন্য ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর আওতায় রূপকল্প-৫ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন বেগমগঞ্জ-৩ ওয়ার্কওভার ক’পের ‘প্রকিউরমেন্ট অব সিমেন্টিং ইউনিট অ্যাক্সেসেসরিজ ফর রূপকল্প-৫ আন্ডার ফরেন এক্সচেঞ্জ’ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
একই প্রকল্পের আওতায় রূপকল্প-৫ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন বেগমগঞ্জ-৩ ওয়ার্কওভারের ‘হায়ারিং অব ওয়্যারলাইন লগিং সার্ভিসেস বেগমগঞ্জ-৩ ওয়ার্কওভার আন্ডার রূপকল্প-৫ ড্রিলিং প্রজেক্ট’সেবা গ্রহনের লক্ষ্যে সর্বনিন্ম দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদানের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে তিন কোটি ৮১ লাখ টাকা।
‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের জন্য ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর আওতায় রূপকল্প-৩ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন কসবা-১ ক’প খননের জন্য হায়ারিং অব ওয়্যারলাইন লগিং সার্ভিসেস অব কসবা-১ এক্সপ্লোরেশন ওয়েল সেবা গ্রহনের নিমিত্ত সর্বনিন্ম দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদানের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ব্যয় হবে চার কোটি ১২ লাখ টাকা।
এছাড়া বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্রগ্রামের সদরঘাট থেকে বাকলিয়া পর্যন্ত কর্ণফুলী নদী খননের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৪২ কোটি টাকা।
আজকের বাজার: এলকে/ ২০ ডিসেম্বর ২০১৭