খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা হচ্ছে: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বলেন,  ‘কারাগারের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে তিনি প্রতিদিন অসুস্থ হচ্ছেন। এখন প্রতি রাতে তাঁর জ্বর আসে। এই কারাগারে এখন কোনো জেনারেটর নেই। আমরা যখন কারাগারে ছিলাম, তখন কখনই বিদ্যুৎ যেত না। জেনারেটর দিয়ে সার্ভিস দেওয়া হতো। এখন বিদ্যুৎ চলে গেলে কোনো ফ্যান কাজ করে না, বাতি জ্বলে না। মোমবাতি আর হাতপাখা ব্যবহার করতে হয়। সারা জীবন তিনি যেটায় অভ্যস্ত, তার ন্যূনতম সুবিধা তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না। এই অমানবিকতা, নিষ্ঠুর আচরণ তাঁর সঙ্গে করা হচ্ছে।’

বুধবার(৩০ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন,  ‘অসুস্থতার কারণে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঠিকভাবে হাঁটতে পারছেন না। তার পরও আগামী ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত সরকার তাঁকে আটকে রাখার চেষ্টা করছে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘মূল মামলায় দেশনেত্রীর জামিন হয়ে গেছে। তারপরও একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। সেই মিথ্যা মামলায়ও হাইকোর্ট থেকে জামিন পাচ্ছেন। কিন্তু সেই জামিনও সরকার আটকে দিচ্ছে। তিনি যেন বের হতে না পারেন, তার সব ব্যবস্থা করছে। এর পেছনে একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা। সরকার আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত তাঁকে আটকে রাখার চেষ্টা করছে।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। এই অসুস্থতা এমন পর্যায় গিয়েছে যে ঠিকমতো হাঁটতে পারছেন না। আমরা এর আগেও বলেছি তাঁর বাঁ হাত অবশ হয়ে গেছে। তিনি আগে থেকে আরথ্রাইটিস, ব্যাক পেইনে ভুগছিলেন। এগুলো বেড়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, তাঁর এমআরআই দরকার। ফিজিওথেরাপি দরকার। সেই ফিজিওথেরাপি তিনি পাচ্ছেন না।’

‘কারাগারে যাঁরা প্রথম শ্রেণিপ্রাপ্ত, তাঁরা অনেক কিছু বাইরে থেকে নিয়ে আসতে পারেন। আমরাও ভোগ করেছি। কিন্তু সেগুলো দেশনেত্রীকে দেওয়া হচ্ছে না। বাইরে থেকে পরিবার যে খাবার পাঠাচ্ছেন, সেটাও তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না। এ মুহূর্তে খালেদা জিয়ার এমআরআই ও সঠিক চিকিৎসা করা দরকার। আমরা চাই, বিলম্ব না করে বিশেষায়িত হাসপাতাল, বিশেষ করে তাঁর পছন্দের ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তর করে তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহদপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরজেড/