খুলনাঞ্চলের ৮ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলে প্রায় ৬০ কোটি টাকা মজুরি বকেয়া রয়েছে শ্রমিকদের। বকেয়া পরিশোধের দাবিতে সোমবার চতুর্থ দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা। এতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে শিল্পাঞ্চলে। শ্রমিক অসন্তোষে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পাটকল সেক্টর।
শ্রমিকরা ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনেও মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছে। রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল করছে। দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে খেটে খাওয়া শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য রাজপথ- রেলপথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান আন্দোলনরত শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা জানায়, গত বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় ৮ সপ্তাহের মজুরির দাবিতে প্লাটিনাম জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। পরবর্তীতে সকাল ১০টায় একে একে ক্রিসেন্ট, দৌলতপুর ও স্টার জুট মিলের শ্রমিকরা তাদের মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করে। এ চারটি মিল বন্ধের সংবাদ পেয়ে দুপুর ২টার দিকে আটরা-গিলাতলা শিল্পাঞ্চলের ইস্টার্ণ এবং যশোর অভয়নগরের জেজেআই জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আলীম জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। আর শনিবার খালিশপুর জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে কার্পেটিং জুট মিল ছাড়া বাকি ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
পাটকলগুলোর সূত্র জানায়, খুলনা অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের মধ্যে ক্রিসেন্ট জুট মিলে প্রায় ৫ হাজার, প্লাটিনামে সাড়ে ৪ হাজার, স্টারে সাড়ে ৪ হাজার, দৌলতপুর জুট মিলে সাড়ে ৬০০, ইস্টার্নে ২ হাজার, আলীমে দেড় হাজার এবং জেজেআই জুট মিলে ২ হাজার ৬০০ এবং খালিশপুর জুট মিলে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। এসব পাটকলের শ্রমিকদের ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে।
স্টার জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মো. বেল্লাল হোসেন মল্লিক বলেন, ৮ পাটকলে শ্রমিকদের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৬০ কোটি টাকা।
তিনি জানান, বছরের প্রথম দিনও কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। সকালে স্ব স্ব মিল গেটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শ্রমিকরা।
এদিকে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) খুলনা অঞ্চলের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা গাজী শাহাদাত হোসেন বলেন, শ্রমিকদের কর্মবিরতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে।
আজকের বাজার: এলকে/ ১ জানুয়ারি ২০১৮