খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা

স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস আজ এক পূর্বাভাসে একথা জানিয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান খান আজ বাসস’কে জানান, বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল (খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চল) ও এর কাছাকাছি পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে স্থল নিন্মচাপ হিসেবে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাব বিরাজমান থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলো এবং দেশের উপকূলীয় এলাকায় জারি করা ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। সেইসাথে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান তিনি।
আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, পশ্চিমবঙ্গে আবস্থানরত স্থল নিন্মচাপটি ক্রমান্বয়ে দূর্বল হয়ে উত্তর-পশ্চিমদিকে আগ্রসর হতে পারে।
তিনি জানান, ভারী বর্ষণের ফলে আবারও চট্টগ্রামের পাহাড়ী এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া পরবর্তী তিন দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, স্থল নিন্মচাপের প্রভাবে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোন কোন জায়গায় অতিভারি বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি ফেনীতে ২৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামে ১২১, কুতুবদিয়া ১০৬, কক্সবাজারে ৯১, সাতক্ষীরায় ১৪৩, যশোরে ৬৩, পটুয়াখালীতে ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলেও জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার সতর্ক বার্তায় বলা হয়, পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থানরত স্থল নিন্মচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় বায়ূচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে । গতকাল দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রংপুরে ৩৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ছিল সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া ও টেকনাফে ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্র ফেনীতে ২৪ দশমিক ২ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৬ টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬ টা ৪৩ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫ টা ২৮ মিনিটে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল ও এর কাছাকাছি পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে স্থল নিম্নচাপ হিসেবে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ূর অক্ষের বাড়তি অংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, স্থল নিন্মচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর বাড়তি অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ূ বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।