গ্রহাণুর আঘাত থেকে পৃথিবী সুরক্ষায় পরীক্ষামূলকভাবে গ্রহাণুতে আঘাত হেনেছে মহাকাশযান

নাসার একটি মহাকাশযান সোমবার পৃথিবী থেকে ৭০ লাখ মাইল দূরে একটি গ্রহাণুকে কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত করতে এটির ওপর আঘাত করেছে। পৃথিবীর দিকে মহাকাশীয় বস্তুর আঘাতে ধ্বংসাত্মক বিপর্যয় থেকে মানব জাতিকে রক্ষায় এই ঐতিহাসিক এবং সফল পরীক্ষা চালানো হয়।
ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট (ডার্ট) ইমপ্যাক্টর তার লক্ষ্যবস্তু স্পেস রক ডিমোরফোসকে ইস্টার্ন টাইম পিএম ৭.১৪ টায় (২৩১৪ জিএমটি) আঘাত হেনেছে। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণের ১০ মাস পরে এটি ওই গৃহাণুতে আছড়ে পড়ে।
নাসার গ্রহ বিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক লরি গ্লেজ বলেন, ‘আমরা একটি নতুন যুগের সূচনা করছি, এমন একটি যুগ যেখানে আমাদের একটি বিপজ্জনক গ্রহাণুর প্রভাবের মতো কিছু থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করার ক্ষমতা আছে।’
৫৩০-ফুট (১৬০-মিটার) দৈর্ঘের ডিমোরফস গ্রহাণুটি একটি মিশরীয় পিরামিডের আকারের সঙ্গে প্রায় তুলনীয়, এটি তার বড় সহদর ডিডাইমোস নামে আধা মাইল লম্বা গ্রহাণুকে প্রক্ষিণ করে। আগে কখনও এমনটা দেখা যায়নি, মহাকাশযানের সঙ্গে সংঘর্ষের এক ঘন্টা আগে এই ক্ষুদ্র চাঁদ ‘মুনলেট’ আলোর সরু রেখা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল।
এটির ডিমের মতো আকৃতি এবং খসখসে, বোল্ডার-ডটেড পৃষ্ঠটি শেষ কয়েক মিনিটের মধ্যে পরিষ্কার এবং দৃশ্যমান হয়ে উঠেছিল। ডার্ট এটির দিকে প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১৪,৫০০ মাইল (২৩,৫০০ কিলোমিটার) বেগে ছুটে যায়।
এটি সফলভাবে আঘাত হানার চূড়ান্ত দৃশ্য দেখে নাসার বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীরা করতালিতে ফেটে পড়েন। গ্রহাণুটিতে আঘাত হানায় এর কক্ষ বিচ্যুতি ঘটে, এতে গ্রহাণুটি আর পৃথিবীর জন্য হুমকি হয়ে উঠছে না।
কিন্তু নাসার মতে একটি বাস্তব পরিস্থিতির মুখে পড়ার আগে এই পরীক্ষাটি চালানো গুরুত্বপূর্ণ।
ডিমোরফোস এর অগ্রভাগে আঘাত করা হয়েছে, নাসা আশা করে যে এটিকে একটি ছোট কক্ষপথে ঠেলে দেবে, ডিডাইমোসকে ঘিরে এই গ্রহাণুর আবর্তন কাল ১০ মিনিট কমে যাবে, আঘাতের আগে এই আবর্তন কাল ছিল ১১ ঘন্টা ৫৫ মিনিট।