গ্রামের গ্রোথ সেন্টার মালিকদের করের আওতায় আনা হবে

গ্রামের কৃষক নয় গ্রোথ সেন্টার মালিকদের করের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।

১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে এনবিআর আয়োজিত ‘প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার সম্পাদক, প্রকাশক,মালিকদের সঙ্গে আয়কর মেলা-২০১৭ পরবর্তী’ মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।

চ্যানেল আই’র বার্তা সম্পাদক শাইখ সিরাজ বলেন, এনবিআর গ্রাম থেকে ট্যাক্স আহরণ করতে যাবে ভালো কথা। গ্রামে এসএমই, ক্ষুদ্র ব্যবসাসহ অনেক ব্যবসা হচ্ছে। সেগুলোকে ট্যাক্সের আওতায় আনেন। যদি ক্ষুদ্র কৃষক গোষ্ঠিকে ট্যাক্সের আওতায় আনেন তাহলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আশ্বস্ত করে বলেন, আপাতত কৃষকদের থেকে ট্যাক্স আদায়ে এনবিআর চিন্তা করছে না। একটি নতুন আইন করা হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে যেসব গ্রোথ সেন্টার আছে, গ্রোথ সেন্টারে যারা ব্যবসা করছেন তাদের ট্যাক্সের আওতায় আনা হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ২০১০ সাল থেকে অফিসার্স ক্লাবে আয়কর মেলা করে আসছি। ২০১৬ সালে আগারগাঁয়ে নির্মাণাধীন জাতীয় রাজস্ব ভবনে অফিসার্স ক্লাবের দ্বিগুণ জায়গা মেলার আয়োজন করা হয়। এবার আরো দ্বিগুণ জায়গা নিয়ে মেলা করা হয়েছে। এরপরও করদাতাদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে। এর মানে মানুষের মধ্যে কর সচেনতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সেজন্য ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করে চারতলা পর্যন্ত মেলা করা হবে।

ট্যাক্স কার্ড বড় ভেন্যুতে হয় না কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান উদাহরণ দিয়ে বলেন, ট্যাক্স কার্ড প্রদানে বড় ভেন্যুর কথা বললে বাবু আর ছড়ুই পাখির কবিতা মনে পড়ে যায়। এনবিআর বাবুই পাখিকে রিপ্রেজেন্ট করে। বাবুই নিজের চেষ্টায় বাসা বাঁধে আর ছড়ুই পরের দালানে থেকে গর্ববোধ করে। সেজন্য আমরা নিজেদের নির্মাণাধীন ভবনে মেলা, ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হয়। এ ভবন জনগণের করের টাকায় হচ্ছে। জনগণ ও দেখতে পাচ্ছেন তাদের টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে। জনগণের করের টাকা যথা স্থানে ব্যয় হয় এবং সেবা বাড়লে ট্যাক্স বাড়ে এ ধারণা দিতেও নিজেদের ভবনে এ আয়োজন।

তিনি বলেন, নভেম্বর মাস আয়কর, ডিসেম্বরে ভ্যাট আর জানুয়ারিতে কাস্টমস উৎসব। এতে মিডিয়া আমাদের বিশেষভাবে সহযোগিতা করে আসছে, করবে। আমাদের ই-টিআইএন লক্ষ্য ছিল ২৫ লাখ। ইতোমধ্যে তা ৩২ লাখের কাছাকাছি চলে এসেছি।

মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমানের প্রস্তাবের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার ব্যবহার করে করসেবা দেওয়া হচ্ছে। জেলা, উপেজলায় কর অফিস হচ্ছে। আমরা বহুদূর যাচ্ছি, আরো দূরে যেতে হবে।

সিঙ্গাপুরের উদাহরণ দিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার আমার সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, সিঙ্গাপুরে কর প্রদানকে অনেকটা টর্চার বা যন্ত্রণা মনে করা হয়। আপনাদের এখানে কিভাবে এটাকে সেবায় পরিণত করলেন? আমি বললাম, এখানে রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকনির্দেশনা, করদাতাদের উৎসাহ, কর ব্যবস্থাপনায় যারা রয়েছেন তাদের করদাতাবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি এবং সেবার মনোভাবের কারণে সেবায় পরিণত হয়েছে। এছাড়া গণমাধ্যম এমনভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন এখন কর প্রদান মানুষের কাছে উৎসব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১৬ নভেম্বর ২০১