ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে দুদক

কেউ ঘুষ চাইলে সরাসরি দুর্নীতি দমন কমিশনে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ্। বলেছেন, তাদের কাছে গেলে ঘুষ ছাড়াই কাজটি করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আবার ঘুষখোর কর্মীর সাজাও নিশ্চিত করা হবে।

বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ মতবিনিয়মকালে এ পরামর্শ দেন ইকবাল মাহমুদ।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘যদি কেউ ঘুষ চায় তাহলে আপনারা আমাদের কাছে আসুন। আপনার কাজের কোনো ক্ষতি হবে না, আপনার কাজ ওই দিনই করা হবে এবং ঘুষখোরকেও ধরা হবে।’

বাংলাদেশে বিভিন্ন কাজ বা সেবায় প্রায়ই ঘুষ দিতে বাধ্য করার অভিযোগ পাওয়া যায়। ঘুষ না দিলে কাজটি আটকে রাখা বা হয়রানির অভিযোগ উঠে।

আর সরকারি কাজে ঘুষ ঠেকাতে ২০১৪ সাল থেকে ফাঁদ মামলা শুরু করেছে দুদক। প্রথম দিকে খুব একটা মামলা করা না গেলেও ইদানীং প্রায়ই সরকারি কর্মকর্তাদের ধরা হচ্ছে। তাদেরকে আটকের পাশাপাশি চাকরি থেকে বরখাস্তের ঘটনাও ঘটছে।

২০১৭ সালে ঘুষসহ দুদকের হাতে ২৫ জন ধরা পড়েছে বলেন জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান।

দুদকে ঘুষসহ দুর্নীতির তথ্য জানাতে সংস্থায় স্বশরীরে আসতে হয় না বলে জানিয়েছেন এর কর্মকর্তারা। টোল ফ্রি নম্বর ১০৬ এ ফোন করেই অভিযোগ জানানো যায়। ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই এই হটলাইনটি চালু করা হয়েছে।

ঘুষ গ্রহীতার পাশাপাশি যারা ঘুষ দেন, তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনতে চায় দুদক। চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঘুষ দেয়া ও নেয় দুটোই সমান অপরাধ। তবে সেধে যারা ‍ঘুষ দেবে তাদের দুইজনের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিব।’

এ সময় ব্যবসায়িদের প্রতিনিধিরা একসাথে বলে ওঠেন, ‘ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে ঘুষ দেন’।

ব্যবায়ীদের এমন প্রতিক্রিয়ায় ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘টিআই (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল) গত বছরের প্রেজেন্টেশনে বলেছিল, মানুষ বাধ্য হয়ে ঘুষ দেয়। আমিও একটা কথা বলেছিলাম ঘুষ দাতা ও গ্রহীতা উভয়কে ধরা হবে। তখন টিআই বলেছিল মানুষ বাধ্য হয়ে ঘুষ দিলে তাকে ধরবেন কেন? হ্যাঁ, বাধ্য হয়ে ঘুষ দিলে ধরি না।’

ঘুষ ঠেকাতে মানুষের এগিয়ে আসা ছাড়া বিকল্প নেই বলেও মনে করেন দুদক প্রধান। বলেন, ‘ভয় না পেয়ে আপনাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। এভাবে যদি ঘুষখোরকে ধরিয়ে দেই, তাহলে আমার কাজ চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। আর আপনার কাজ চিরদিনের জন্য স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

‘আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে চাই, আপনারা স্বচ্ছ মনে ব্যবসা করবেন।’

এ সময় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার সময় সঠিক কাগজপত্র দেয়ার পরামর্শ দেন ইকবাল মাহমুদ। বলেন, জালিয়াতি করে ঋণ নিলে তারা কাউকে রেহাই দেবেন না। তবে সঠিক প্রক্রিয়ায় ঋণ নিয়ে যারা খেলাপি হয়েছেন, তারা ব্যাংকের সঙ্গেই বিষয়টি ফয়সালা করে নেবেন জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এ ক্ষেত্রে তাদের কিছু করণীয় থাকবে না।’

এমআর/ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮