চট্টগ্রামে আড়াই মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়েছে। নগরীর আটটি ল্যাবরেটরির মধ্যে মাত্র চারটিতে গতকাল কম নমুনা পরীক্ষায় কম রোগী শনাক্ত হয়। তবে সংক্রমণ হার গত ৩ জানুয়ারির পর সবচেয়ে বেশি।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১১১ জন করোনাভাইরাসের নতুন বাহক শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ২০ শতাংশ। গত ৩ জানুয়ারির পর এটাই চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার। তবে এ সময়ে করোনায় আক্রান্তদের কারো মৃত্যু হয়নি।
উল্লেখ্য, গতকালের আগে চলতি মাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার ছিল ১৯ মার্চ, ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এর আগে, ৩ জানুয়ারি সংক্রমণ হার ওঠেছিল ১৩ দশমিক ০১ শতাংশে। সর্বনি¤œ সংক্রমণ হার মিলে ৬ মার্চ, ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। অবশ্য সেদিন এক রোগীর মৃত্যু হয়। গত চারদিনে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ১৫ জানুয়ারি করোনায় ২ জনের মৃত্যু হয়। এ মাসে মোট ৮ জন মারা যান।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর চারটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ৯১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে ১১১ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১০০ জন ও আট উপজেলার ১১ জন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩৭ হাজার ৫৪১ জন। এর মধ্যে শহরের ২৯ হাজার ৭০০ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৮৪১ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে বোয়ালখালী, রাউজান ও ফটিকছড়িতে ২ জন করে এবং হাটহাজারী, সীতাকু-, সন্দ্বীপ, সাতকানিয়া ও পটিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল করোনায় কেউ মারা যায়নি। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩৮৩ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৮১ জন ও গ্রামের ১০২ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৫০ জন। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা বেড়ে ৩৩ হাজার ৪৪৮ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৫৫৩ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন ২৮ হাজার ৮৯৫ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২০ জন ও ছাড়পত্র নেন ১০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৫৯ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৫৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ৫ জনসহ ৪১ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ২১ টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ২ টিসহ ৯ টিতে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ২৮৩ টি নমুনায় গ্রামের ৪ টিসহ ৫২ টি এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২১ টি নমুনার মধ্যে শহরের ৯ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। তবে চট্টগ্রামের যে ৭ টি নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয় তার সবগুলোরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
এদিন গুরুত্বপূর্ণ চারটি ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। ল্যাবগুলো হলো : ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে চমেকে ৭ দশমিক ০৯, আরটিআরএল-এ ৪২ দশমিক ৮৬, শেভরনে ১৮ দশমিক ৩৭, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪২ দশমিক ৮৬ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে ০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।