চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত ৫ জনের মৃত্যু

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন ৮২ জনের দেহে জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ১১ দশমিক ১২ শতাংশ। সুস্থ হয়েছেন ২৮৬ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল শনিবার নগরীর পাঁচটি ল্যাবে চট্টগ্রামের ৭৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ৮২ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪৯ জন এবং বারো উপজেলার ৩৩ জন। উপজেলা পর্যায়ে শনাক্ত ৩৩ জনের মধ্যে সীতাকু-ে ৭ জন, চন্দনাইশে ৬ জন, মিরসরাইয়ে ৫ জন, রাউজানে ৪ জন, হাটহাজারী, পটিয়া ও ফটিকছড়িতে ২ জন করে এবং সন্দ্বীপ, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, আনোয়ারা ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। ফলে এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৫৩ হাজার ২৫১ জন। এদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪২ হাজার ৪৩৫ জন ও গ্রামের ১০ হাজার ৮১৬ জন।
করোনায় গতকাল ২ পুরুষ ও ৩ নারী মারা গেছেন। এদের ৪ জন শহরের ও ১ জন গ্রামের বাসিন্দা। ফলে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৬১৪ জন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪২ জন শহরের ও ১৭২ জন গ্রামের। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ২৮৬ জনকে। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৪০ হাজার ১ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ৭৪৩ জন ও ঘরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩৪ হাজার ২৫৮ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ২৭ জন ও ছাড়পত্র নেন ৫৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১ হাজার ২৪৪ জন।
উল্লেখ্য, গতকালের ৫ জনসহ চলতি মে মাসের ২৯ দিনে চট্টগ্রামে ৯০ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ৮ জন মারা যান ৮ মে। মৃত্যুশূন্য ছিল দুই দিন, একজন করে মারা যান পাঁচদিন। গত এপ্রিল মাসে তিনদিন মৃত্যুশূন্য ছিল। পুরো মাসে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়। গতকাল আক্রান্তের চেয়ে আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ গুণ বেশি ছিল। নতুন আইসোলেশনের চেয়ে করোনামুক্তির ছাড়পত্র গ্রহীতার সংখ্যাও দ্বিগুণের বেশি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শহরের ১৮ জন ও গ্রামের ১১ জনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৬৮ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৫ জন ও গ্রামের ৯ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে স্থাপিত আরটিআরএলে ১৯ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৯ টি ও গ্রামের ৪ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৩৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১১ জন ও গ্রামের ৭ জন এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ১৮ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ২ টিসহ ৬ টিতে ভাইরাস থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
সাপ্তাহিক ছুটির কারণে গতকাল ১১ টি ল্যাবের মাত্র পাঁচটিতে নমুনা পরীক্ষা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল, মেডিক্যাল সেন্টার ও পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা পরীক্ষা হয়নি। এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবেও পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশ, চমেকে ২৩ দশমিক ৫৩, আরটিআরএলে ৬৮ দশমিক ৪২, শেভরনে ৫ দশমিক ০৩ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।