চট্টগ্রামে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ১১ জনের মৃত্যু

চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সর্বোচ্চ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন ১৭১ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর ছয়টি ল্যাবে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৩৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ১৭১ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৪১ জন ও দশ উপজেলার ৩০ জন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৪৮ হাজার ৮৮৭ জন। এর মধ্যে শহরের ৩৯ হাজার ২৪১ জন ও গ্রামের ৯ হাজার ৬৪৬ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬ জন করে চন্দনাইশ ও রাউজানে, ৫ জন সীতাকু-ে, ৪ জন মিরসরাইয়ে, ৩ জন সাতকানিয়ায়, ২ জন ফটিকছড়িতে এবং ১ জন করে রয়েছেন হাটহাজারী, আনোয়ারা, পটিয়া ও বোয়ালখালীতে।
গতকাল করোনায় জেলায় এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ১১ রোগীর মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে ৮ জন শহরের ও ৩ জন গ্রামের বাসিন্দা। জেলায় মৃতের সংখ্যা এখন ৪৯৭ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৩৭০ জন ও গ্রামের ১২৭ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ১০৩ জন। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ৮৯৭ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৯৫৭ জন ও ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩০ হাজার ৯৪০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩০ জন ও ছাড়পত্র নেন ২৯ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৪২৭ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে গতকালের ১১ জনসহ চলতি মাসের ২৪ দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০৮ জনে। গত বছর ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর এটাই একদিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ মাসে মাত্র দুই দিন, ২ এপ্রিল ও ১৪ এপ্রিল জেলায় কোনো করোনা রোগী মারা যাননি। করোনাকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ রোগীর মৃত্যু হয় চলতি মাসের ১০ তারিখে। তবে এদিন এ মাসের সর্বনি¤œ ২২৮ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ২১ শতাংশ। জেলার সর্বোচ্চ ৫৪১ জন আক্রান্তও শনাক্ত হয় ১১ এপ্রিল। এদিন ৭ রোগীর মৃত্যু হয়।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে সবচেয়ে বেশি ৪৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে গ্রামের ৮ জনসহ ৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৩১৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ১০ জনসহ ৪৩ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ৬২ টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ২ টিসহ ৩২ টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৩১২ টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৮ টিসহ ৩৫ টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৫৭ নমুনার মধ্যে গ্রামের ২ টিসহ ২৪ টি এবং নতুন যুক্ত মেডিকেল সেন্টারে ১৪ টি নমুনায় শহরের ২ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
এদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবেও চট্টগ্রামের কোনো নমুনা পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে চমেকে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ১৩ দশমিক ৫৬, আরটিআরএল-এ ৫১ দশমিক ৬১, শেভরনে ১১ দশমিক ২২, ইম্পেরিয়ালে ১৫ দশমিক ২৮ এবং মেডিকেল সেন্টারে ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।