চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আবারো ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। চলতি মাসের প্রথম ৫ দিন সংক্রমণ কম এবং হার ১০ শতাংশের মধ্যে থাকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয় ১৯৮ জন। সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ। এ সময় ৪ করোনা রোগির মৃত্যু হয়।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, এন্টিজেন টেস্ট ও নগরীর নয়টি ল্যাবে গতকাল ১ হাজার ৫৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। নতুন শনাক্ত ১৯৮ জনের মধ্যে শহরের ১০২ জন ও ১২ উপজেলার ৯৬ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে রাউজানে সর্বোচ্চ ২৬, আনোয়ারায় ১৫, হাটহাজারীতে ১৪, লোহাগাড়া ও বোয়ালখালীতে ১০ জন করে, সাতকানিয়ায় ৮, মিরসরাইয়ে ৫, সীতাকু-ে ৩, ফটিকছড়ি ও পটিয়ায় ২ জন করে এবং বাঁশখালীতে ১ জন রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১ লাখ ৩১৯ জন। এর মধ্যে শহরের ৭২ হাজার ৮০৪ এবং গ্রামের ২৭ হাজার ৫১৫ জন।

গতকাল করোনায় আক্রান্ত রোগিদের মধ্যে শহর ও গ্রামের ২ জন করে ৪ জন মারা যান। মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ২৫৫ জন হয়েছে। এতে শহরের ৬৯৮ জন ও গ্রামের ৫৫৭ জন। আরোগ্যলাভ করেন নতুন ৮৯৩ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৭৫ হাজার ৭২৮ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১০ হাজার ১১ জন। বাসায় থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৬৫ হাজার ৭১৭ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ১৫২ এবং ছাড়পত্র নেন ২১৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৪১১ জন।

উল্লেখ্য, আগের দিন ৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ৬ শতাংশে নেমে এসেছিল। এক হাজার ২৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৬ জন আক্রান্ত ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ছিল ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ। ৫ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৫৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ২৩ ও গ্রামের ২৮ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৭২টি নমুনার মধ্যে শহরের ২১ ও গ্রামের ১৫টিতে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১৫২ জনের নমুনায় শহরের ১৪ ও গ্রামের ৮ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ১১ ও গ্রামের ৪১টিতে জীবাণুর উপস্থিতি চিহ্নিত হয়। নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন বুথে ২৫ জনের এন্টিজেন টেস্ট করা হলে একজনও আক্রান্ত পাওয়া যায়নি।

বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৩৭১টি নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের দু’টিসহ ১০টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫১ নমুনায় গ্রামের একটিসহ ৭টি, মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৪৪ নমুনার মধ্যে গ্রামের একটিসহ ৪টি, মেডিকেল সেন্টারে ১৮টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের একটি, এপিক হেলথ কেয়ার হাসপাতালে ৭৭ নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ১৪টি এবং ল্যাব এইডে ২টি নমুনার ১টিতে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। চট্টগ্রামের ৬ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এতে সবগুলোর ফলাফল নেগেটিভ আসে। তবে, এদিন নগরীর বিশেষায়িত কভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ, সিভাসুতে ২০ দশমিক ৯৩, চমেকে ১৪ দশমিক ৪৭, চবি’তে ৫২ দশমিক ৫২, এন্টিজেন টেস্টে ০ শতাংশ, শেভরনে ২ দশমিক ৬৯, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৩ দশমিক ৭২, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ৯ দশমিক ০৯, মেডিকেল সেন্টারে ৫ দশমিক ৫৫, এপিক হেলথ কেয়ারে ১৮ দশমিক ১৮, ল্যাব এইডে ৫০ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ০ শতাংশ সংক্রমণ হার পাওয়া যায়। তথ‌্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান