চট্টগ্রামে শিশু মীম হত্যা মামলার রায়ে ৮ জনের ফাঁসি

চট্টগ্রামে ফাতেমা আক্তার মীম নামে ৯ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার রায়ে অভিযুক্ত ৮ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত ।সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জমিউল হায়দার এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. বেলাল হোসেন ওরফে বিজয় (১৮), মো. রবিউল ইসলাম ওরফে রুবেল (১৬), মো. হাছিবুল ইসলাম ওরফে লিটন (২৬), মো. আকসান মিয়া প্রকাশ হাসান (১৮), মো. সুজন (২০), মো. মেহেরাজ প্রকাশ টুটুল (৩২), আয়শা মমতাজ মহলের কেয়ারটেকার মনিরুল ইসলাম মনু (৪৯) ও শাহাদাত হোসেন সৈকত (১৯)।

এদের মধ্যে শাহাদাত হোসেন সৈকত পলাতক। বাকিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তার মিম আকবরশাহ এলাকার ফাতেমাতুজ জোহরা হেফজুল কোরআন মহিলা মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা মো. জামাল উদ্দিন ওয়াশিং মেশিনের কাজ করেন। তাদের বাসা ছিল আকবরশাহ এলাকার কনকর্ড সী-ওয়ার্ল্ড’র রাজা কাশেমের কলোনিতে।

আসামিদের মধ্যে বিজয় নগরীর পতেঙ্গা থানাধীন নারিকেল তলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মানিকের ছেলে, রুবেল কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার চণ্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা কাদের ভূঁইয়ার ছেলে, লিটন মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি আউটশাহী গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে, হাসান সিলেটের জগন্নাথপুর থানার সোনামঞ্চ এলাকার আরজু মিয়ার ছেলে, সুজন কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার দৌলখাঁ বাজার এলাকার মৃত আব্দুল হোসেনের ছেলে, মেহেরাজ বায়েজিদের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে এবং পলাতক শাহাদাত হোসেন সৈকত কুমিল্লার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তারা সবাই নগরীর আকবর শাহ এলাকায় থাকতেন।

ট্রাইব্যুনালের পিপি এম এ নাসের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শিশু মীম হত্যার রায়ে সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় ৮ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে আদালত। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।’

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি নগরীর আকবরশাহ এলাকার আয়শা মমতাজ মহল নামের একটি ভবনে নিয়ে গিয়ে প্রথমে ধর্ষণ এবং পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় শিশু মীমকে।

ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে আকবরশাহ’র বিশ্ব ব্যাংক কলোনির ছয় তলা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির পাশ থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।

আলোচিত এ মামলার পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষদর্শীসহ ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

আদালত সূত্র জানায়, এ ঘটনায় শিশু মীমের মা রাবেয়া বেগমের করা মামলায় ৮ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এজহারভুক্ত ৮ জনের মধ্যে ৭ জন আসামি কারাগারে আছেন। শাহাদাত হোসেন সৈকত নামের একজন আসামি ঘটনার পর থেকে পলাতক।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি মা রাবেয়া বেগমের সাথে থাকা বিরোধকে কেন্দ্র পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় শিশু মীমকে।