ছিনতাইকারী চক্রের ৪২জন গ্রেপ্তার

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের ৪২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। গতকাল শুক্রবার এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৭৪টি বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল, একটি ট্যাব ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ১৩টি ছুরি ও ২টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।

ডিবি জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ছিনতাই ও ছিনতাইয়ের সময় হত্যার মতো ঘটনার পর এ ৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ছিনতাইকারী ও সালাম পার্টির সক্রিয় সদস্য। এরা সাতরাস্তা, নাবিস্কো, মহাখালী, বনানী, গুলশান-১, গুলশান লিংক রোড, রামপুরা ব্রিজ, ধানমন্ডি, বংশাল, চকবাজার, কলাবাগান, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় গলিপথগুলোতে যাতায়াতকারী রিকশা বা পায়ে হাঁটা যাত্রীদের ছুরি দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাই করে।

মো. আবদুল বাতেন বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় পর্যাপ্ত লাইট নেই। যেসব ল্যাম্পপোস্ট আছে সেগুলো বেশিরভাগ নষ্ট। এ জন্য গলিগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। এতে ওই সব এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। যেসব এলাকায় এমন অবস্থা, সেখানে আমাদের দায়িত্বশীলদের নজর দেয়া দরকার। নগরবাসীকেও ওইসব এলাকা দিয়ে চলাচলের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ছিনতাইকারীরা সুযোগ পেলেই ছিনতাই করে। তাদের আইনের আওতায় এনে সাজার ব্যবস্থা না করা হলে অপরাধ কমানো সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, বেশিরভাগ সময় গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বাস-লঞ্চ টার্মিনাল এবং অন্ধকার গলিতে ছিনতাই হয়ে থাকে। ছিনতাইকারীরা তাদের সুবিধামত কোনো স্থানে রিকশার যাত্রী অথবা পথচারীদের সালাম দেয় যেন তারা পরস্পর পরস্পরের পূর্ব পরিচিত। সালাম পেয়ে রিকশার যাত্রী অথবা পথচারী থামলে তারা কাছে এসে চাকু দিয়ে আঘাত করার ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে পেট্রল জোরদারসহ গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হবে। ধরা হবে ছিনতাইকারীদের।

ডিবি কর্মকর্তা আরো বলেন, ছিনতাইকৃত মোবাইল পার্টসের দোকান ও মোবাইল কেনা-বেচা করে এমন দোকানে বিক্রি করে তারা। ধরা পড়া ঠেকাতে দোকানদার চোরাই মোবাইল কিনে মোবাইল বিক্রি না করে এর ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ বিক্রি করে। এমনকি দোকানিরা মোবাইলের মাদারবোর্ড ও আইএমইআই নম্বর পাওয়া যাবে এমন পার্টস বিক্রি করে না। এসব মোবাইল ফোন মেরামত দোকানের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। চোরাই মোবাইলের বিক্রি ও কেনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের আমরা চিহিৃত করেছি। অচিরেই সেসব জায়গায় অভিযান চালানো হবে।

ছিনতাইয়ের ঘটনায় নগরবাসী মামলা করতে নিরুৎসাহিত হয়, এর পেছনে পুলিশের দায় আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল বাতেন বলেন, এটা দায়িত্বশীলতা। কোথাও কোনো অপরাধ হলে তা থানায় গিয়ে অভিযোগ দেয়া। এছাড়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয় না অপরাধ সম্পর্কে জানা কিংবা অপরাধীকে শনাক্ত করা। নগরবাসীকে বলতে চাই, আপনারা থানায় যাবেন, অভিযোগ দেবেন। থানা যদি মামলা বা অভিযোগ নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে তবে আমাদের ঊর্ধ্বতনদের জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নেবো।

শনিবার ভোরে কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার সময় রিকশা থেকে পড়ে তারিনা বেগমের মৃত্যু বিষয়ে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। এ ব্যাপারে মামলা হবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।

আজকের বাজার/এমএইচ