ছড়িয়ে পড়া দুই শতাধিক রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে ফেরত

মায়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে রোহিঙ্গারা। তাদের জন্য নির্দিষ্ট শরণার্থী ক্যাম্প থাকলেও তাদের অনেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। এখন পর্যন্ত এমন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ২০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আটক করে কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠিয়েছে পুলিশ।

১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরে সাম্প্রতিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরির্শক,আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের অনেকেই পরিবারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে। এরা যাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে- সেজন্য পুলিশ-র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনী চেকপোস্ট স্থাপন করেছে। এসব চেকপোস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ২০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আটক করে নির্দিষ্ট শরণার্থী ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ প্রধান বলেন, রোহিঙ্গারা অন্য দেশের নাগরিক। এদেশে থাকার কোনও বৈধ কাগজপত্র তাদের নেই। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, মানবিক কারণে তাদেরকে বিভিন্ন জায়গা থেকে আটক করে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। যাতে তাদের আইডি কার্ড দেওয়া যায়। ডাটাবেজ তৈরি করা যায়। বাইরে থাকলে তো আর এটা করা যাবে না। তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। তাদের সুবিধার জন্যই এসব কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

রোহিঙ্গারা দেশের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে কি কি সমস্যা হতে পারে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা তো চেষ্টা করবে বিভিন্ন উপায়ে এদেশের নাগরিক হওয়ার। এটা করতে গিয়ে তারা প্রতারকের খপ্পড়ে পড়তে পারে। হয়রানির শিকার হতে পারে। সেজন্য তাদের ক্যাম্পে থাকা উচিত। কোথাও রোহিঙ্গাদের কোনো সন্ধান পেলে তা পুলিশকে জানানো উচিত।

মায়ানমারের দুই সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, তারা ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেছেন; সেজন্য ওই আইনে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সহযোগীর বিরুদ্ধে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। তাই আটকও করা হয়নি।

ত্রাণের নামে কেউ রোহিঙ্গাদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে প্রতিবেশী দেশে হামলা করার সাহস কেউ পাবে না। তা বরদাস্ত করা হবে না। ত্রাণ দেওয়ার নামে যাতে কেউ কাউকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারিও রয়েছে। তবে ত্রাণ দিতে হলে সেখানকার জেলা প্রশাসককে জানিয়ে দিতে হয়। যে কেউ গিয়ে এভাবে ত্রাণ দিতে পারবে না বলে জানান আইজিপি।

এদিকে দুর্গাপূজা ও আশুরা উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান এ কে এম শহীদুল হক।

তিনি বলেন, আমরা দুই সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ইতোমধ্যে বৈঠক করেছি। কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি যেন না হয়- সেজন্য দুই সম্প্রদায়ের নেতাদেরকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।

এবার তাজিয়া মিছিলের নিশানার লাঠি ১২ ফুটের বেশি হতে পারবে না। এছাড়া ব্যাগ, পোটলা, ছুরি, কাঁচি এসব মিছিলে নিয়ে যাওয়া যাবে না। যে কেউ মিছিল নিয়ে হোসনি দালান এলাকায় ঢুকতে পারবে না বলে জানান পুলিশের মহাপরিদর্শক।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারী, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক মো. মহসিন হোসেন, সহকারি মহাপরিদর্শক সোহেলী ফেরদৌসী, পুলিশ সদরদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ কে এম কামরুল আহসানসহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা।

আজকের বাজার : এলকে/এলকে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭