ঝিনাইদহ সদরে ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে ঘিরে রাখা দুটি বাড়ির পাশ থেকে সক্রিয় সুসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ১৬ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা থেকে বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট আসার পর বেলা পৌনে ১২টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়।
র্যাবের এএসপি আবুল কালাম আযাদ জানান, জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে সোমবার গভীর রাত থেকে বাড়ি দুটি ঘিরে রাখে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশ। খুলনা থেকে বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট আসার পর বেলা পৌনে ১২টায় মূল অভিযান শুরু হয়। এ সময় জঙ্গি আস্তানার পাশ থেকে দুটি সক্রিয় সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির আহমেদ জানান, সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের দুটি বাড়ি গভীর রাত থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা হয়। একটি বাড়ি মহেশপুরের বজরাপুরে নিহত জঙ্গি তুহিনের বড় ভাই সেলিমের এবং অপর বাড়িটি তার চাচাতো ভাই প্রান্তের। এখানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে জেলার মহেশপুরের বজরাপুর গ্রামে ৭ মে সকাল থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে সিটিটিসি ইউনিট বাড়িতে অভিযান চালায়। ওই জঙ্গি আস্তানা আস্তানা আত্মঘাতী হামলায় তুহিনসহ দুই জঙ্গি নিহত হন। এ ছাড়া আহত হন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম, এসআই মুজিবুর রহমান ও ডিএসবির এসআই মহসীন। এ সময় একতলা ওই বাড়ির মালিক জহুরুল ইসলাম, তার ছেলে জসিম ও ভাড়াটিয়া আলমসহ চারজনকে আটক করা হয়।
একই দিন জেলা সদরের নেবুতলায় মৃত শরাফত হোসেনের বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এর আগেই শরাফত হোসেনের দুই ছেলে শামীম (২২), হাসান (৩৫) ও তাদের এক বন্ধুকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৮ মে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৮টি বোমা, ১টি নাইন এমএম পিস্তল ও ৬টি গ্রেনেড পাওয়া যায়।
এর আগে ২২ এপ্রিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের ঠনঠনেপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। অভিযানের নাম ছিল ‘অপারেশন সাউথ প’ বা দক্ষিণের থাবা। প্রায় ৪ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের অভিযানে ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে বিস্ফোরক তৈরি রাসায়নিক ভর্তি ২০টি ড্রাম, একটি সেভেন পয়েন্ট সিক্স বোরের পিস্তল, একটা ম্যাগাজিন, সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পাঁচটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়।
অপারেশন ‘সাউথ প’ সমাপ্ত ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমেদ জানান,বাড়িটিকে জঙ্গিদের বোমা তৈরির কারখানা বলা যেতে পারে। এ বাড়িতে তিন-চার জন জঙ্গি ছিল। তারা আগেই পালিয়ে গেছে। বাড়িটিতে জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিভাগীয় পর্যায়ের লোকজন আসা যাওয়া করত বলেও জানান তিনি।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে/১৬ মে,২০১৭