দেশের মানুষকে আন্ডারইস্টিমেট না করতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি হুশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন,প্রত্যাশা করি আপনাদের (সরকার) শুভবুদ্ধির উদয় হউক, কথায় কথায় আন্ডারইস্টিমেট করবেন না। দেশের মানুষ সব কিছু মেনে নেবে তা ভাববেন না।এরাই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় স্বৈরচারকে বিদায় করেছে, এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় পাকহানাদারদের বিদায় করতে লড়াই করেছে।
শনিবার ৯ ডিসেম্বর দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যাচার, অপপ্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করে কি অর্জন করতে চান। আবার নির্বাচন করতে চান। বিএনপিকে নির্বাচন করতে দেয়া যাবে না, নির্বাচন ও রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চান।
“একটি কথা খুব স্পষ্ট বাংলাদেশের মানুষ আর কখনও ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন হতে দেবে না।আমরা নির্বাচন চাই। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হবে।”
বিএনপির মহাসচিব বলেন, যে সংসদে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয় সেই সংসদ বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। যে আইন তৈরি করা হয়, সংবিধান যেভাবে পরিবর্তন করা হয় সেটা জনগণের জন্য আইন কিংবা সংবিধান নয়। আর এটাই বাস্তবতা।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় যেতে যারা বাধা দেবে ও দিচ্ছে তাদেরকে গুম করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। শুধু তাই নয়, এরা নতুন করে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে মানুষকে বোকা বানিয়ে অধিকার কেড়ে সিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চায়।মূলত আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন তাদের আসল চেহারায় ফিরে আসে। সেই চেহারা হচ্ছে ধ্বংসাত্মক ও ফ্যাসিস্ট। মনে রাখতে হবে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের যে লড়াই তা অসম। তবে আমরা এখন নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলন করে যাচ্ছি।
সংগঠনের ১০ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথার ফাদে পড়ে আন্দোলন ব্যাহত না করতে বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিএনপির জন্য আন্দোলন এক মাত্র পথ। অথচ প্রধানমন্ত্রী কথার জালে বিএনপিকে দিনে নয়াপল্টন এবং রাতে গুলশান অফিসে আটকে রেখেছে। মির্জা ফখরুল আপনি বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিবেন। প্রশ্নটা হচ্ছে আপনি কোন বিচারকের কাছে বিচার চাইবেন, তাদের কি সেই বিচার বিভাগ ও বিবেক আছে। যারা বিচারের আগেই ফাসির আদেশ দিয়েছেন।
জাফরুল্লাহ বলেন, সবাই আজ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ক্ষুব্ধ তবে আমি ততোটা ক্ষুব্ধ নই। কারণ ইতিমধ্যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় উনি উনার পিতাকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আপনি বলেছেন প্রশ্নবিদ্য নির্বাচন আর হবে না, তাহলে ভয়টা কোথায়?
তবে সম্প্রতি কিছু অসঙ্গতিপূর্ন ভাবে প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের প্রতি উদ্দেশ্য করে বলেছেন বিএনপি নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে আসবে। আসলেই কী এটা উনার (প্রধানমন্ত্রী) বক্তব্যে নাকি ভারতের কারো কাছ থেকে পাওয়া নির্দেশ?
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সভাপতি অধ্যাপিকা রেহেনা প্রধান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, জাতীয়তাবাদী মুত্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা প্রফেসর ডা ইকবাল হাসান, অ্যাডভোকেট আজাদ মাহমুদ, শাহজাদা আলম, মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, সাইদুর রহমান তামান্না, অ্যাডভোকেট এম এ আজিজ, মতিউর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, নরুল কবির ভুইয়া প্রমুখ।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৯ ডিসেম্বর ২০১৭