‘জনবিচ্ছিন্ন সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাসী’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারত যেহেতু যখন তিস্তা চুক্তিতে রাজি নই,তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলতে পারতেন বাংলাদেশও কোন চুক্তি করবে না। সে কথা তিনি বলেননি। তার সেই শক্তি নেই। বরং তিনি নতজানু হয়ে অন্য সব চুক্তি স্বার করে এসেছেন।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে সিলেট বিভাগ সংহতি সম্মিলনীর আয়োজনে বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ৫ বছর নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নতজানু এই সেবাদাস সরকার দিয়ে জনগণের সমস্যা সমাধান হবে না। ন্যায্য হিস্যা পাওয়া যাবে না। বর্তমান সরকার জনবিচ্ছিন্ন বলেই, জোর করে মতায় থাকতে চায়। তাই জনগণের শক্তি দিয়ে এদের পরাজিত করতে হবে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন এই কষ্টের দিনে শপথ
নেই- যে কোনো মূল্যে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনবো। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে রা করবো। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ তিস্তার পানি আনবে না। আনার মতাও নেই। তাদের গণভিত্তি নাই। ভারতের সাথে ধরকষাকষির মতা নাই।’

সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন,নিরপে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন চাই। সেই নির্বাচন দিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘ইলিয়াস আলীকে খুঁজে না পাওয়ার ব্যাথা-বেদনা ভুলে যাবার নয়। কিন্তু এ ব্যাথা, আমাদের নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। এই শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন,গণবিচ্ছিন্ন এই সরকার মতায় টিকে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। জনগণের ঐক্য সৃষ্টি  করে নৈতিকতাহীন সরকারকে পরাজিত করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু এক ইলিয়াস আলী নয়, হিসাব মতে ২ হাজারের অধিক মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। ৫ শত অধিক ইলিয়াস আলী গুম রয়েছে। গোদ রাজধানীতে প্রায় ৫০ জন এবং সারাদেশে ৫০০- এর অধিক নেতাকর্মী গুম হয়েছে। অনেকে পঙ্গু হয়ে গেছে, মামলা আর আসামির তো কোনো হিসেব জানা নেই। কেউই বলতে পারে না,এরা কবে আসবে, নাকি আসবে না। সরকার এখনও অস্বীকার করে। কিন্তু  প্রমাণিত যে, আইনশৃঙ্খলা-রাকারী বাহিনী তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে কোনো হদিস নেই।

কাউয়ূম চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম, কলিম উদ্দিন মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরাফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টুসহ আরো অনেকে। এতে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দীর্ঘদিন ধরে গুম (নিখোঁজ) থাকা এম ইলিয়াস আলী’র স্ত্রী তাহমিনা রুশদি লুনা।

আজকের বাজার রিপোর্ট: এলকে/আরআর/১৭.০৪.২০১৭