বর্তমানে দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। মোট প্রজনন হার অর্থাৎ নারীপ্রতি সন্তান জন্ম হচ্ছে ২ দশমিক ৩ জন। গত সাত বছর ধরেই এক জায়গায় স্থির রয়েছে এই দুইটি হার।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে রংপুর বিভাগের মানুষ। ওই অঞ্চলে ৭০ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণে রংপুর বিভাগের সাফল্য বেশি। ওই অঞ্চলের মোট প্রজনন হার বা নারীপ্রতি সন্তান জন্ম (টিএফআর) ১ দশমিক ৯ জন। এই বিভাগের ৭০ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেন। এখন পর্যন্ত ৭ শতাংশ দম্পতির কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের বার্তা পৌঁছেনি। অর্থাৎ ওই অঞ্চলে ৭ শতাংশ দম্পতি সচেতনতা কর্মসূচির বাইরে আছেন।
পরিবার পরিকল্পনা ও জন্মনিয়ন্ত্রণে সফলতার দিক থেকে রংপুরের পরেই আছে খুলনা বিভাগের। ওই বিভাগের ৬৭ শতাংশ দম্পতিই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেন। খুলনায় নারীপ্রতি গড় জন্ম ১ দশমিক ৯ জন। সচেতনতা কর্মসূচির বাইরে আছেন ৯ শতাংশ দম্পতি।
রাজশাহী বিভাগের ৬৯ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করলেও ওই অঞ্চলে নারীপ্রতি গড় সন্তান জন্ম ২ দশমিক ১ জন। ওই বিভাগের ৭ শতাংশ দম্পতি এখনও সচেতনতা কর্মসূচির বাইরে আছেন।
ঢাকা বিভাগে নারীপ্রতি গড় জন্ম ২ দশমিক ৩ জন। সচেতনতা কর্মসূচির বাইরে আছেন এই অঞ্চলে ১২ শতাংশ দম্পতি। অর্থাৎ পরিবার পরিকল্পনা ও জন্মনিয়ন্ত্রণে বিশেষ সফলতা নেই ঢাকা বিভাগের। এই অঞ্চলের ৬৩ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেন।
দুর্গম অঞ্চল হলেও দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের দিক থেকে ঢাকা বিভাগের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে বরিশাল বিভাগ। ওই বিভাগের ৬৩ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেন। আর বরিশাল বিভাগের ১১ শতাংশ দম্পতি সচেতনতা কর্মসূচির বাইরে আছেন।
পরিবার পরিকল্পনা ও জন্মনিয়ন্ত্রণে সফলতার দিক থেকে খুব বেশি সফলতা নেই চট্টগ্রাম বিভাগেও। নারীপ্রতি গড় সন্তান জন্ম এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের দিক থেকে ঢাকার চেয়েও পিছিয়ে রয়েছে ওই বিভাগ। চট্টগ্রামের ৫৫ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেন। আর ওই অঞ্চলে নারীপ্রতি গড় সন্তান জন্ম ২ দশমিক ৫ জন। সচেতনতা কর্মসূচির বাইরে আছেন চট্টগ্রামের ১৭ শতাংশ দম্পতি।
পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিতে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে সিলেট বিভাগ। সেখানে নারীপ্রতি সন্তান জন্ম ২ দশমিক ৯ জন। ওই অঞ্চলের ১৮ শতাংশ দম্পতি সচেতনতা কর্মসূচির বাইরে আছেন। আর সিলেট বিভাগের ৪৮ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন।
ভৌগোলিক অবস্থান ও ধর্মীয় রক্ষণশীলতার কারণে পরিবার পরিকল্পনা ও জন্মনিয়ন্ত্রণে সিলেট বিভাগে সফলতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিমত দিয়েছেন সমাজ বিশ্লেষকরা।