নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ বাতিল করে নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। আদেশ জারির সঙ্গে সঙ্গেই সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত ২২টি অঙ্গরাজ্য ও ২টি শহরের পক্ষ থেকে। অঙ্গরাজ্য ও শহরগুলোর কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এ আইনি লড়াইয়ে শরিক হয়েছে নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন সংগঠনও।
বুধবার ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর সব ম্যাসাচুসেটসের বোস্টন বা নিউ হ্যাম্পশায়ারের কনকর্ডে দায়ের করা হয়েছে।
গত সোমবার দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প। অভিষেক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণেই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ সময় অবৈধ অভিবাসীদের ‘অপরাধী’ হিসেবেও বর্ণনা করেন তিনি।
এরপর নির্বাহী আদেশে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান নিয়মকানুনে পরিবর্তন আনার কথা জানান ট্রাম্প। যার আওতায় অবৈধ কোনো অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান প্রসব করলে সেই শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না।
দায়িত্ব নিয়েই ফেডারেল সরকারের সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেন ট্রাম্প। কোনো অবৈধ অভিবাসী অথবা সাময়িক ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন, এমন কেউ সন্তান জন্ম দিলে সেই শিশুকে যেন মার্কিন নাগরিকত্ব দেওয়া না হয়।
ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বোস্টনের ফেডারেল আদালতে জোটবদ্ধভাবে মামলা করেছে ২২টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া ও সান ফ্রান্সিসকো শহর কর্তৃপক্ষ। মামলায় যুক্তি দেখানো হয়েছে, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার এ চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের লঙ্ঘন।
মামলায় আরো বলা হয়েছে, বৃহত্তর পটভূমিতে প্রেসিডেন্টের অভিবাসন আইন প্রণয়নের ক্ষমতা আছে। তা সত্ত্বেও নাগরিকত্বের অধিকার কেড়ে নেওয়ার নির্দেশ প্রেসিডেন্টের এখতিয়ার বহির্ভূত।
এ মামলার আগে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন, কয়েকটি অভিবাসী সংগঠন ও অন্তঃসত্ত্বা এক নারী একই ধরনের মামলা করেন। মামলাগুলোকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই ট্রাম্পের প্রথম বড় আইনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নিউ জার্সির অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাথিউ প্ল্যাটকিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ট্রাম্পের এমন অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে আজকের এ মামলা দায়ের ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে আমরা আমাদের অধিবাসী ও তাদের মৌলিক সাংবিধানিক অধিকারের পক্ষে দাঁড়াব।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে অবশ্য হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে ট্রাম্পের আরও কিছু আদেশের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্যগুলো ও বিভিন্ন পরামর্শক গোষ্ঠী মামলা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।