জাতিসংঘ অধিবেশনে যাবে না সুচি

মায়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সুচি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। সুচির মুখপাত্র আজ বুধবার এই তথ্য জানান।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সুচির এক সময়ের পশ্চিমা মিত্ররা এখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার অবস্থানের সমালোচনা করছেন। সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিলে মুখোমুখি তাদের সেই সমালোচনা শুনতে হবে। আর এই কারণেই হয়তো তিনি অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না।

তবে সু চির মুখপাত্র জ হতওয়া বলেন, আমরা শুধু এটা বলতে পারি যে আমাদের নেত্রী আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন না।

সুচির আরেক মুখপাত্র অং সিন রয়টার্সকে বলেন, আমাদের নেত্রী কোনো সমালোচনার ভয় করেন না। তিনি দেশের কিছু বিষয় নিয়ে চাপে আছেন বলে এবারের অধিবেশনে যোগ দিতে পারছেন না।

আগামী ১৯ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর এবারের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

উল্লেখ, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর সেদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিপীড়নে অং সান সুচির নীরব ভূমিকার কড়া সমালোচনা করা হচ্ছে বিশ্ব জুড়ে। কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে প্রশ্ন তোলা হয়েছে সুচির নৈতিক সাহস নিয়েও।

জার্মানির গণমাধ্যমে কয়েকদিন ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের খবর প্রকাশিত হয়ে আসছে। এতে শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চীর নীরব ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করা হচ্ছে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মায়ানমারের পুনর্জাগরণের নেতা তিনি (সুচি)। সেনাবাহিনী যখন তাকে গৃহবন্দি করে, তার মুক্তির দাবিতে জেল খাটেন অনেকে, করেন মৃত্যুবরণও। কিন্তু সু চির ঘনিষ্ঠরাই এখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার অবস্থানে অবাক৷ ফিঁকে হয়ে এসেছে তাদের স্বপ্নও।

ডয়েচে ভেলের আরেকটি প্রতিবেদনে একটু ইতিহাস টেনে বলা হয়েছে, সু চির বাবা জেনারেল অং সানকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মায়ানমারের স্বাধীনতার লড়াইয়ে একজন নায়ক হিসেবেই দেখা হয়। সেদিকে ইঙ্গিত করে কেউ কেউ বলছেন, সেনাবাহিনীর সাথেই সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে সু চি। আবার কেউ ধারণা করছেন, কষ্টে পাওয়া এই ক্ষমতা হারানোর ভয়ই তাকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধা দিচ্ছে।

তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ সেনা শাসনের বিরোধীতা করে ১১ বছর জেল খাটা মিয়ানমারের তাম্পাডিপা ইনস্টিটিউটের প্রধান খিন সাও উইন। তার মতে, এগুলো অযৌক্তিক কথাবার্তা। সু চি এখন আর সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি না। বরং এখনকার সমস্যা হল সু চির নৈতিক সাহসের অভাব।

গত কয়েকদিনে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায় তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে।পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ অমানবিক ঘটনার কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। এই ঘটনায় অং সান সুচির নীরব অবস্থান তার নোবেল প্রাপ্তি সমালোচনার মুখোমুখী হয়। সুচির নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়ার জন্য নোবেল শান্তি কমিটির কাছে লাখ লাখ মানুষ ইতোমধ্যে আবেদন জানিয়েছেন।

আজকের বাজার : এলকে/এলকে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭