জাপানকে হারিয়ে বেলজিয়ামের দুর্দান্ত জয়

রাশিয়া বিশ্বকাপে জাপানের শেষ ষোলতে খেলার সুযোগ হয় অনেকটা ভাগ্যদেবীর কৃপায়। ভাগ্যদেবী এশিয়ার দলটির কৃপা করলেও নক আউট পর্বে এসে আর কৃপা করেনি। বরং ভাগ্যই তাদের ছিটকে দিয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে। খেলার ঠিক শেষ মুহূর্তের গোলে জাপানকে ৩-২ গোলে হারায় বেলজিয়াম। ফলে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল তারা।

বেলজিয়াম অবশ্য শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলে আসছিলো। তবে  এক সময় জাপান ঠিকই ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে। এই এই বিষয়টিই বুঝতে দেরি হয় লুকাকু-হ্যাজার্ডরা।

বিরতির আগ পর্যন্ত একাধিক গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা। বলা ভালো জাপানের রক্ষণ তাদের প্রতিহত করেছিল বারবার। জাপানও পাল্টা আক্রমণে উঠেছিল বার কয়েক। কিন্তু বেলজিয়ামের ডিফেন্স ভেদ করতে পারলেও গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়াকে ফাঁকি দিতে পারেনি তারা। দ্বিতীয়ার্ধের ৪৮ মিনিটে সেটি সম্ভব হলো। বেলজিয়ামের ডিফেন্ডার ইয়ান ভার্তোনোর ভুলের সুযোগে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে গোল করেন গেঙ্কি হারাগুচি।

১-০ গোলে এগিয়ে যায় জাপান। ঠিক ৫ মিনিট শিনজি কাগাওয়ার পাস থেকে ২৫ গজ দূর থেকে নেয়া শটে আচমকা গোল করেন তাকাশি ইনুই। ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ তখন জাপানের হাতে। আর বেলজিয়াম যেন পথ হারা পথিক। আর একের পর শানিত আক্রমণে আরও গোটা কয়েক গোলের ভীতি ছড়াতে থাকলো জাপান।

তখনই কী বিশ্বকাপের শেষ দেখে ফেলেছিল বেলজিয়াম? ১৯৭০ বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানি-ইংল্যান্ড ম্যাচের পর কোনো দলই যে দুই গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পরে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এত ভাবার সময় কী ছিল লুকাকু-হ্যাজার্ড-কোম্পানিদের? বেলজিয়াম কোচ ৬৫ মিনিটে ফেলাইনিকে মাঠে নামান। ফেলাইনি কী পারবেন নতুন চিত্রনাট্য নির্মাণ করতে? তিনি নামার পরই যেন আক্রমণে ধার খুঁজে পায় বেলজিয়াম। ৬৯ মিনিটে বক্সের কোনা থেকে হেডে দারুণ এক গোল করেন ভার্তোনে। ৭৪ মিনিটে হ্যাজার্ডের দারুণ এক ক্রস থেকে গোল করে বেলজিয়ামকে সমতায় ফেরান ফেলাইনি নিজে। দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে বেলজিয়াম।

৮১ মিনিটে জাপানকে এগিয়ে নেয়া হারাগুচিকে তুলে নিয়ে অভিজ্ঞ হোন্ডাকে মাঠে নামান জাপান কোচ। বিশ্বকাপ জুড়েই দেখা গেছে, অভিজ্ঞ হোন্ডা মাঠে নামলে কিছু না কিছু ঘটে। এবারও বেশ কয়েকটি সুন্দর আক্রমণ হলো। হোন্ডা নিজেও গোল পেতে পারতেন। আক্রমণে গিয়ে পোস্টে নেয়া শট বেলজিয়ামের রক্ষণ প্রতিহত করে। অতিরিক্ত সময়ের ৩ মিনিটে দুর্দান্ত একটি ফ্রি-কিক নেন হোন্ডা। দারুণ রিফ্লেক্সে সেটি ঠেকিয়ে দেন থিবো কর্তোয়া।

জাপানের সমর্থকরা যখন গোল না হওয়ার আক্ষেপে পুড়ছে তখনই পাল্টা-আক্রমণে গিয়ে বেলজিয়ামকে জয়সূচক গোল এনে দেন শাদলি। ম্যাচের বাকি মাত্র কয়েক সেকেন্ড! বিজয় উল্লাসে মেতে উঠলো বেলজিয়াম আর এতকাছে গিয়ে জয় ছিনতাই হওয়ার যন্ত্রণায় অশ্রুসিক্ত হলো জাপান। হায় জাপান!

আরএম/