শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। মানববন্ধন থেকে আগামীকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হয়।
রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ সমাবেশে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘আমাদের হৃদয় আজ স্তব্ধ হয়ে গেছে। বিদেশি নাগরিক থেকে শুরু করে তরুণ লেখক অভিজিৎ, দিপককের ওপর একইভাবে হামলা করা হয়েছে। এদের পক্ষে যে শক্তি রয়েছে তা সমূলে ধ্বংস করে দিতে হবে।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘প্রগতিশীলদের বিপক্ষে যে কালো হাত ধেয়ে আসে তা ভেঙে দেয়া দরকার।’
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার প্রফেসর ড. কামরুল হুদা বলেন, ‘আমরা যারা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করি, তাদের ধারক বাহক হলেন জাফর ইকবাল। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পাকিস্তানিদের দোসররা তাকে বারবার ব্যাহত করতে চাচ্ছে। এই হামলা তারই বহিঃপ্রকাশ।’
প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী বলেন, ‘এ হামলা শুধুমাত্র জাফর ইকবালের ওপর নয়, প্রগতিশীল মুক্তচিন্তা, মুক্তবুদ্ধিচর্চাকারীদের ওপরও। মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী চায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে থামিয়ে দিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ হামলা একক কোনও ব্যক্তির কাজ নয়, নেপথ্যে অনেকে জড়িত। শুধুমাত্র হামলাকারীর বিচার করলে হবে না, ইন্ধনদাতা, হুমকিদাতা সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, ‘একটি প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর চর এই হামলা চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। সারা দেশ প্রতিবাদমুখর। আমরা চবি শিক্ষক সমিতিও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এর আগেও দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। কাপুরুষগুলো সব সময় শিক্ষকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ’৭১ এর ন্যায়।’
জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘বারবার প্রগতিশীলদের ওপর হামলা হচ্ছে। হামলা থেকে অনেকে ফিরে এসেছেন, অনেকে ফিরে আসতে পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘জাফর ইকবালকে দীর্ঘ দিন ধরে হুমকি দিয়ে আসছে, সর্বশেষ তারা তা বাস্তবায়ন করেছে। আমরা শিক্ষক সমাজ মাঝে মাঝে রাস্তায় নামি। তবে আমাদের যেন আবার রাস্তায় নামতে না হয়। এর পেছনে যারা আছে তাদের জনসমক্ষে আনতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মিহির কুমার রায় এ ধরনের হামলাকারীদের দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের আওয়ায় আনার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমরা এভাবে আর দেশের সম্পদ হারাতে চাই না।’
এসময় তিনি আগামীকাল সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাধব দীপের সঞ্চালনায় ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মিহির কুমার রায়ের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর বেনু কুমার দে, সাবেক সভাপতি ও ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আওরঙ্গজেব, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শফিউল আলম, শাবিপ্রবি’র সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. ফারুক আজম প্রমুখ।
এতে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, শাখা ছাত্রলীগ, প্রগতিশীল ছাত্রজোটসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সংহতি প্রকাশ করেন।
আরএম/