জার্মানিতে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগে ইউরোপ

রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহের গুরুত্বপূর্ণ নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইনের নির্ধারিত সংস্কার কাজ শেষে করে ইউরোপ উদ্বিগ্ন হয়ে বৃহস্পতিবার থেকে রাশিয়ান গ্যাস সরবরাহে ফেরার জন্য অপেক্ষা করছে। রাশিয়ান গ্যাসের ওপর ব্যাপক নির্ভরশীল জার্মানি জ্বালানিকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহারের জন্য ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে।
নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন ১০ দিনের বার্ষিক মেরামতের পরে গ্রীনিচ মান সময় ০৪০০ টায় জার্মানি পুনরায় পাইপলাইন খুলে দিয়েছে, তবে জার্মানি আশঙ্কা করছে রাশিয়া আপাত আংশিক বন্ধ রাখা ট্যাপগুলো সম্পূর্ণ বা পুরোপুরি বন্ধ রাখার সুযোগটি ব্যবহার করবে, যা মহাদেশটিকে তীব্র জ্বালানি সংকটে নিমজ্জিত করবে।
ইউক্রেনে আগ্রাসন নিয়ে কয়েক বছরের মধ্যে রাশিয়া ও পশ্চিমাদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ এই সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মস্কো শস্য এবং জ্বালানি সরবরাহকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পিছপা হবে না।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘মস্কো ইচ্ছাকৃতভাবে ইউক্রেন থেকে খাদ্য রফতানি বন্ধ দিচ্ছে।’
চ্যান্সেলর বলেন, ‘আমাদের নিজেদের রক্ষা করার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।’
তবে রাশিয়ান গ্যাসের ওপর জার্মান নির্ভরতা এবং মস্কো থেকে নেতিবাচক সংকেতগুলো ইউরোপের শীর্ষ অর্থনীতি জার্মানির উপর চাপ বাড়াবে।
বুধবার আইএমএফ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হলে ২০২২ সালের জিডিপি ১.৫ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জ্বালানি সংস্থা গ্রাজপ্রম বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে যাওয়া নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইনের মাধ্যমে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সিমেন্স গ্যাস টারবাইনের অনুপস্থিতির জন্য প্রায় ৪০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। এই গ্যাস টারবাইন সংস্কারের জন্য কানাডায় পাঠানো হয়েছে। মেরামত করা এই টারবাইন কানাডা থেকে রাশিয়ার পথে রয়েছে এবং রবিবার এটি রাশিয়ায় পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এই সপ্তাহে জোর দিয়ে বলেছেন, গ্যাজপ্রম তার সমস্ত সরবরাহের বাধ্যবাধকতা পূরণ করবে।
ইরান ও তুরস্কের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর পুতিন তেহরানে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘গ্যাজপ্রম তার দায়বদ্ধতা পূরণ করেছে, পূরণ করছে এবং সম্পূর্ণভাবে পালন করবে।’
তবে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, এই মাসের শেষের দিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আরেকটি গ্যাস টারবাইন পাঠানোর জন্য আগামী সপ্তাহ থেকে গ্যাসের প্রবাহ কমে ২০ শতাংশ দাঁড়াতে পারে।