দেশের নাগরিকদের জন্য মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট চালুর জন্য জার্মানির সাথে জিটুজি পদ্ধতিতে ই-পাসপোর্ট চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাসুদ রেজওয়ান এবং ভেরিডোস কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হান্স ওলফগ্যাং কোঞ্জ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন। খবর ইউএনবি।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন ও জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিলস অ্যানেন উপস্থিত ছিলেন।
৩৪ কোটি ইউরোর এ চুক্তির আওতায় পুরো ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন প্রক্রিয়া জড়িত থাকবে, যার মেয়াদ হবে ১২ বছর। চুক্তির আওতায় উচ্চ-প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ একটি স্থানীয় পাসপোর্ট তৈরির কারখানা স্থাপন করা হবে।
এই প্রকল্পের ফলে বাংলাদেশি নাগরিকদের যাতায়াত সহজ হবে এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে জার্মানি।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এটি ই-পাসপোর্ট চালু বিষয়ে বাংলাদেশ ও জার্মান সরকার প্রধানদের মধ্যকার একটি অঙ্গীকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির সাথে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছিলেন। আর এই চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে আমরা এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।’
চুক্তি অনুযায়ী, দেশের প্রতিটি বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে ই-গেট বসানো হবে বলে জানান মন্ত্রী। সরকার অভিবাসন কার্যক্রম সহজে পরিচালনা করার জন্য ই-পাসপোর্ট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মাধ্যমে জার্মান কোম্পানি ভেরিডোসকে বাংলাদেশে পরবর্তী প্রজন্মের ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সরবরাহ, স্থাপন ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মান বজায় রেখে মেশিন রিডেবল থেকে উন্নত ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট ব্যবস্থায় পদার্পণ করবে।
অনুষ্ঠানে জার্মান প্রতিমন্ত্রী নিলস অ্যানেন বলেন, জার্মানির সাথে এই প্রযুক্তিগত অংশীদারীত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। যা জাল পরিচয়পত্র বা সন্ত্রাস দমনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে প্রস্তুত করে তুলবে।
নতুন সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা খুব শিগগিরই বিশ্বের মধ্যে অন্যতম অত্যাধুনিক ও নিরাপদ পাসপোর্টের মালিক হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গত ২১ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আন্তর্জাতিক চাহিদা পূরণে এমআরপির পাশাপাশি ই-পাসপোর্ট চালু অনুমোদন করে। কারণ জার্মানিসহ কিছু দেশ এমআরপি গ্রহণ করে না।
‘বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ শীর্ষক এ প্রকল্পটি সরকারি অর্থায়নে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
আজকের বাজার/এমএইচ