জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ, হল ত‌্যাগের নির্দেশ

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ‘উপাচার্যপন্থী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের’ সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীদের আজ বিকাল ৪টার মধ্যে হল ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে জাবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ‘উপাচার্যপন্থী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের’ সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আহত হন।

দুর্নীতির অভিযোগে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে সোমবার সন্ধ্যায় তার বাসভবন অবরোধ করেন জাবির আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে সরে যেতে না চাইলে দুপুর ১২টার দিকে তাদের নির্বিচারে মারধর শুরু করেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে। পরে মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী) জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ বলেন, ‘আমরা উপাচার্যকে অনেক সময় দিয়েছি। কিন্তু তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। উল্টো আন্দোলন দমাতে তিনি ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত করে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। এর আগেও তিনি ৫৪ শিক্ষার্থীর নামে মামলা দিয়েছিলেন। এ মামলাবাজ উপাচার্যকে হঠাতেই আমরা আজকে এখানে বসতে বাধ্য হয়েছি।’

‘দুর্নীতিবাজ উপাচার্যকে জাবিতে আর দেখতে চাই না। কারণ তিনি নিজে মিথ্যা কথা বলেন, তার শিক্ষকরা মিথ্যা কথা বলেন এবং তার প্রশাসনও মিথ্যা কথা বলে। তাই উপাচার্য পদে তার থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। এখন যদি তাকে বাসা থেকে বের হতে হয় তাহলে আমাদের ওপর দিয়ে বের হতে হবে। আর তিনি যখন এখান থেকে বের হবেন তখন তিনি আর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকবেন না,’ যোগ করেন তিনি।

এর আগে সংকট সমাধানে রবিবার রাতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সাথে আলোচনা হয় আন্দোলনকারী শিক্ষকদের। তবে কোনো সমাধান ছাড়াই আলোচনা শেষ হয়।

ক্যাম্পাস উন্নয়নের ১,৪৪৫ কোটি টাকার প্রকল্পে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় উপাচার্যের জড়িত থাকার অভিযোগ এনে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিতে গত আগস্টে আন্দোলন শুরু করে জাবি শিক্ষার্থীরা।

অভিযোগ রয়েছে যে প্রকল্পের টাকা ভাগবাটোয়ারা করে জাবি ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছেন উপাচার্য।

আজকের বাজার/এমএইচ