জিয়া, খালেদা ও এরশাদ দেশের উন্নয়ন করেনি: হাসিনা

বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শে লজ্জা-শরম নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭৫-এ আমার বাবা-মা’সহ পুরো পরিবার সদস্যকে ঘাতকেরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দূতাবাসে চাকরি দিয়েছে। তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধী-রাজাকারদের মন্ত্রী বানিয়েছে, উপদেষ্টা বানিয়েছে। তাদের হাতে লাখো শহীদের রক্তরঞ্জিত পতাকা তুলে দিয়েছে। আমি বলব, ওদের লজ্জাশরম কম।

আজ রোববার বিকালে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ওদের লজ্জাশরম কম, কেন কম বলি? ওরা তো তো চায়নি বাংলাদেশ স্বাধীন হোক। তারা তো বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। জিয়া বলুন, এরশাদ বলুন আর খালেদা জিয়ার কথা ধরুন তারা কেউই দেশের উন্নয়ন করেনি। তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় এসে দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের মাথাকে তারা সারাবিশ্বের কাছে ছোট করেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ এখন মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ঘুষ খেয়েছে ধরা পড়েছে। কোথায় ধরা পড়েছে? আমেরিকার ফেডারেল কোর্টে ধরা পড়েছে, সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে। আমরা সিঙ্গাপুর থেকে জনতার কিছু টাকা ফেরত এনেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশে দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি, কল-কারখানা গড়ার ব্যবস্থা করেছি। বাংলাদেশে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। দেশের কোনো কোনো জায়গায় বিদ্যুতই যেত না। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেখি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৬০০ মেগাওয়াট। এখন আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ১৬ হাজার মেগাওয়াট।

তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল, আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

এর আগে চাঁদপুরবাসীর জন্য ২৩ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ২৪ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী হাইমচর উপজেলায় বাংলাদেশ স্কাউটসের ষষ্ঠ জাতীয় কমডেকা উদ্বোধন করেন।

এর আগে ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁদপুর এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে মোড়ে মোড়ে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। শহরের বাবুরহাট পুলিশ লাইন থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে বিলবোর্ড আর তোরণে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র।

প্রকল্পগুলো হলো, চাঁদপুর জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের (৬-তলা ভিতের ৪ তলা পর্যন্ত) স্টাফ কোয়ার্টার, চাঁদপুর পৌরসভার পুরানবাজার ভূপৃষ্ঠস্থ পানি শোধনাগার, চাঁদপুর পৌরসভার নতুনবাজার ভূপৃষ্ঠস্থ পানি শোধনাগার ও উচ্চ জলাধার, জেলার পুরানবাজার ইব্রাহিমপুর সাখুয়া এলাকার মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প সংরক্ষণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত), মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকা সংরক্ষণ (হাইমচর) এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত), চাঁদপুর সরকারি কলেজের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস।

চাঁদপুর পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের ৪-তলা একাডেমিক ভবন, মতলব উত্তর উপজেলার সুজাতপুর ডিগ্রি কলেজের ৪-তলা একাডেমিক ভবন, মতলব উত্তর উপজেলার কালিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের ৪-তলা একাডেমিক ভবন, কচুয়া বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের ৪-তলা একাডেমিক ভবন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার লাউতলী ডা. রশিদ আহম্মেদ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের ৪-তলা একাডেমিক ভবন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শোল্লা উচ্চবিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, মতলব উত্তর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলার ৬০ জন ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার জন্য বাসস্থান, হাইমচর উপজেলাধীন চাঁদপুর পুরানবাজার (ডেলের বাজার)-হাইমচর চরভৈরবী সড়ক উন্নয়ন।

চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন রালদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ, চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ, চাঁদপুর সদরের আমিনুল হক পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ, কদমতলা পৌর সুপার মার্কেট, স্বৈরাচারবিরোধী ৯০-এর গণআন্দোলনে শহীদ ছাত্রলীগ নেতা জিয়াউর রহমান রাজু স্মরণে ‘রাজু চত্বর’, ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, চাঁদপুর ও মতলব ধনাগোদা নদীর ওপর সেতু (মতলব সেতু)।

মতলব দক্ষিণ উপজেলার গালিম খাঁ চাঁদপুর-কুমিল্লা সংযোগ স্থানে সীমানা গেট নির্মাণ, কচুয়া উপজেলার জগৎপুর অংশে চাঁদপুর-কুমিল্লা সংযোগ স্থানে সীমানা গেট নির্মাণ, ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরমান্দারী চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর সংযোগ স্থানে সীমানা গেট নির্মাণ, মতলব দক্ষিণ উপজেলা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, কচুয়া উপজেলা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, হাইমচর উপজেলা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, কচুয়া পৌরসভার ভূগর্ভস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ।

মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর জেলার হরিণা ফেরিঘাট এবং চরভৈরবী এলাকার কাটাখাল বাজার রক্ষা প্রকল্প, ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাশারা উচ্চবিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, মতলব দক্ষিণ উপজেলার হজরত শাহজালাল উচ্চবিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, মতলব দক্ষিণ উপজেলাধীন নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, মতলব দক্ষিণ উপজেলাধীন মতলব পৌর ভূমি অফিস নির্মাণ, মতলব দক্ষিণ উপজেলাধীন নারায়ণপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ।

চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন বালিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, শাহরাস্তি উপজেলাধীন কনৈ ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, কচুয়া উপজেলাধীন কচুয়া দক্ষিণ ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, কচুয়া উপজেলাধীন কাদলা ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, হাইমচর উপজেলাধীন ঈশানবালা জিসি শরীয়তপুর-চাঁদপুর আরঅ্যান্ডএইচ সড়ক উন্নয়ন, মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, চাঁদপুর পরিবার পরিকল্পনা অফিস নির্মাণ ও চাঁদপুর পৌর অফিস ভবন।

আজকেরবাজার/এস