পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতি চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। পুলিশ বলছে, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের সিল-সই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দিয়ে থাকতো।
১৭ সেপ্টেম্বর রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।
তিনি বলেন, অভিযোগের পেক্ষিতে অনুসন্ধানের পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এমন একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতি চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন- মোসলেম মিয়া, শাহ আলম কবির, আশিকুর রহমান ও আব্দুর রহিম। এসময় তাদের কাছ থেকে জাল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ১ হাজার ৬১২টি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নকল সীল ৬৯টি, নোটারী পাবলিকের অ্যাম্বুস সীল ৩টি, বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার(এসপি) ও ওস’র সীল ৬১৭টি, পাঞ্চ মেশিন তিনটি, কম্পিউটর ২টি ও একটি প্রিণ্টার জব্দ করা হয়।
আব্দুল বাতেন বলেন, এ চক্রটি গত মার্চ মাস থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও ট্রাভেল এজেন্সির চাহিদার প্রেক্ষিতে অর্থের বিনিময়ে এ জালিয়াতি করে আসছিল। এরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তাদের সিল-সই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রদান করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
যুগ্ম-কমিশনার বলেন, আনেক সাধারণ মানুষ না বুঝে এই চক্রের কথায় টাকা দিয়ে ভূয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিয়েছে। প্রেসে ছাপিয়ে তা চালিয়ে দিতো। এতে কোনো ধরণের বার কোড অনুসরণ করা হতো না। একই বার কোডে সব পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি করেছে তারা।
আব্দুল বাতেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে চাকরি বা অন্য কোনো কারণে বিদেশ গমনেচ্ছুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হচ্ছে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স। মাত্র ৫০০ টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা দিয়ে আবেদন করলে ২-৩ দিনের মধ্যেই তথ্য যাচাই বাছাই শেষে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়া যায়।
এজন্য পুলিশের ওয়ান স্টপ সার্ভিস, অনলাইন সিস্টেম ও ফর্মেও পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করা যায়। থানার ওসি ও এসপির সইয়ের পর খোঁজ খবর নেওয়া হয়। কোনো মামলার দাগী আসামী বা ফৌজদারি মামলা না থাকলে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যায়। সেখান থেকে ২/৩ দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় চলে আসে। সেখান থেকে পুলিশের মাধ্যমে আবেদনকারীকে প্রদান করা হয়।
এখানে জালিয়াত চক্র টাকার বিনিময়ে সব কাজ নিজেরা ঘরে বসে করে দিতে চেয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া এটি বড় ধরণের অপরাধ। বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে। এধরণের প্রতারক চক্রের কাছে না গিয়ে সরাসরি পুলিশের মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, পুলিশের মাধ্যমে ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যম থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়া যায় না। যদি কেউ দেয় তাহলে সেটা অবশ্যই ভুয়া এবং তাকে আমাদের হাতে তুলে দিন।
আজকের বাজার : এলকে/এলকে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭