টানা ২৫ দিন পর করোনায় মৃত্যুশূন্য চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে টানা ২৫ দিন পর করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন কাটলো। এর আগে সর্বশেষ ২৬ এপ্রিল কোনো করোনা রোগির মৃত্যু হয়নি। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১৩৭ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ১৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ১৩৭ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৯৮ জন ও দশ উপজেলার ৩৯ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে সর্বোচ্চ ৯ জন, ফটিকছড়িতে ৬ জন, রাউজানে ও সীতাকু-ে ৫ জন করে, বাঁশখালী ও রাঙ্গুনিয়ায় ৪ জন করে, বোয়ালখালীতে ৩ জন, মিরসরাই, আনোয়ারা ও সাতকানিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৫২ হাজার ৪৪৪ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪১ হাজার ৯০৭ জন ও গ্রামের ১০ হাজার ৫৩৭ জন।
গতকাল করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগির মৃত্যু হয়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ৫৯৩ জনই রয়েছে। এতে শহরের ৪৩২ জন ও গ্রামের ১৬১ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ১৩০ জন। ফলে মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৮ হাজার ৭৫৪ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ৫০২ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩৩ হাজার ২৫২ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ৫১ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৪০৩ জন।
উল্লেখ্য, গতকালের আগে চলতি মে মাসে চট্টগ্রামে করোনায় কোনো মৃত্যুশূন্য দিন কাটেনি। এ মাসের প্রথম ২০ দিনে ৬৯ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। সবচেয়ে বেশি ৮ জনের মৃত্যু হয় ৮ মে। একজন করে মারা যান চারদিন। এপ্রিল মাসে সর্বশেষ ২৬ তারিখসহ তিনদিন মৃত্যুশূন্য ছিল। তবে সে মাসে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে গতকাল সবচেয়ে বেশি ৫০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে গ্রামের ৬ জনসহ ২৩ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ১৬ ও গ্রামের ২১ জন পজিটিভ বলে চিহ্নিত হন। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৪৬টি নমুনার মধ্যে শহরের ১৪ ও গ্রামের ৫টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৭৮ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ১৫ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন।
নগরীর চার বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১২৮টি নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ১টিসহ ১০টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৬৩টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৩টিসহ ২০টি, মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১২টি নমুনায় শহরের ৩টি এবং মেডিকেল সেন্টারে ১৬টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৫টিতে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রামের ৫৮ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় ৩টি ছাড়া সবগুলোরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ, চবি’তে ২২ দশমিক ২৯, সিভাসু’তে ১৩ দশমিক ০১, চমেকে ১৯ দশমিক ২৩, শেভরনে ৭ দশমিক ৮১, ইম্পেরিয়ালে ৩১ দশমিক ৭৪, মেডিকেল সেন্টারে ৩১ দশমিক ২৫, মা ও শিশু হাসপাতালে ২৫ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।